কুয়াকাটা ডলফিন রক্ষা কমিটির দলনেতা রুম্মান ইমতিয়াজ বলেন, ‘আজ সকালের জোয়ারে ডলফিনটি ভেসে এসেছে। এর মাথায় আঘাতের চিহ্ন আছে। আমাদের স্বেচ্ছাসেবকেরা খবর পেয়ে ডলফিনটি উদ্ধার করে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে রেখেছেন। আমরা বন বিভাগ ও মৎস্য বিভাগকে এ খবর জানিয়েছি।’ একের পর এক ডলফিন মারা যাওয়ায় তাঁরা শঙ্কিত বলেও জানান তিনি।
সংগঠনের পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত কুয়াকাটা সৈকতে ১৫টি মৃত ডলফিন ভেসে এল। শুধু আগস্টেই কুয়াকাটা সৈকতে ৯টি মৃত ডলফিন ভেসে আসে। গত ৯ দিনে ৪টি মৃত ডলফিন ভেসে এল।
গত বছরও কুয়াকাটাসংলগ্ন উপকূলে সাত–আটটি মৃত ডলফিন ভেসে এসেছিল বলে জানিয়েছেন কলাপাড়া উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা।

কুয়াকাটা সৈকতে ১৫টি মৃত ডলফিন ভেসে এল। শুধু আগস্টেই কুয়াকাটা সৈকতে ৯টি মৃত ডলফিন ভেসে আসে। গত ৯ দিনে ৪টি মৃত ডলফিন ভেসে এল।
উপকূলের জীববৈচিত্র্য রক্ষা, মৎস্য ব্যবস্থাপনা ও সমুদ্রের নীল অর্থনীতি নিয়ে কাজ করা গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড ফিশের এনহ্যান্সড কোস্টাল ফিশারিজ ইন বাংলাদেশ (ইকো ফিশ-২) অ্যাক্টিভিটির পটুয়াখালী জেলার সহযোগী গবেষক সাগরিকা স্মৃতি বলেন, প্রতিবছর জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বেশি ডলফিন মারা যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। এ সময় সাগরে প্রবল ভরা জোয়ার থাকে। সমুদ্রে ডাইনোফ্লাজেলেক্ট শৈবালও বাড়ে এবং বিষাক্ত শামুক-ঝিনুক হয়। ডাইনোফ্লাজেলেক্ট শৈবাল সামুদ্রিক মাছ খেয়ে থাকে। শৈবাল খাওয়া সেসব মাছ যদি ডলফিন খায়, তবে ডলফিনের মৃত্যু হতে পারে। এসব শৈবাল নিউরোটক্সিন বহন করে, যা সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীর মৃত্যু ঘটায়। সামুদ্রিক বিষাক্ত শামুক-ঝিনুক খেলেও ডলফিন মারা যেতে পারে।
এ বিষয়ে পটুয়াখালী জেলার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) আবদুল্লাহ আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, মৃত ডলফিনের নমুনা হিসেবে ‘অন্ত্র’ সংগ্রহ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেই নমুনা বন অধিদপ্তরের ওয়াইল্ডলাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল ইউনিটে পাঠানো হবে। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। এরপর বোঝা যাবে আসলে ডলফিনগুলো কী কারণে মারা যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, কুয়াকাটা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেদের সচেতন করতে শুক্রবার কুয়াকাটাসংলগ্ন আলীপুরে ডলফিন রক্ষায় সচেতনতামূলক সভা করা হবে। তা ছাড়া দ্রুত বন বিভাগ, মৎস্য বিভাগ ও স্থানীয় জেলেদের নিয়ে ‘ডলফিন রেসপন্স টিম’ গঠন করা হবে। এই টিম কুয়াকাটা এলাকায় সার্বক্ষণিক কাজ করবে।