অনলাইন ডেস্ক::
চীনের জিনজিয়াং প্রদেশের উইঘুরদের ওপর যে নির্যাতন চালানো হচ্ছে বলে আন্তর্জাতিক মহলে দাবি করা হচ্ছে, তাকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি নিউজিল্যান্ড। বুধবার (৫ মে) এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব করা হলে সংসদে সেটি বাতিল হয়ে যায়। জার্মান গণমাধ্যম ডয়েচেভেলে জানায়, ‘গণহত্যার’ বদলে ‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন’ শব্দটি যুক্ত করা হয় প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডানের লেবার পার্টির আপত্তিতে।
এ বিষয়ে নিউজিল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী নানাইয়া মাহুতা বলেন, ‘নিউজিল্যান্ড চীনের কাছে একাধিকবার উইঘুদের নিয়ে উদ্বেগ তুলে ধরেছে। কিন্তু গণহত্যা শব্দটি আমাদের ব্যবহার করতে চায় না কারণ এটি গুরুতর আইনি অভিযোগের মধ্যে পড়ে। 'গণহত্যা' বিষয়টি আন্তর্জাতিক অপরাধগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর এবং সঠিক বিশ্লেষণের মাধ্যমেই এর আনুষ্ঠানিকভাবে ফয়সালা হতে পারে।’
এদিকে কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন উইঘুর মুসলিমদের সঙ্গে চীনের আচরণকে সরাসরি গণহত্যা হিসেবে অভিহিত করে আসছে । তবে দুই দেশ নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া এটি মানতে নারাজ। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা জানাচ্ছেন, চীনের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের শক্তিশালী অর্থনৈতিক সম্পর্কই নেপথ্যে কাজ করছে।
এর আগে চীনের সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিমদের ওপর ‘গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী’ অপরাধ চালাচ্ছে বলে জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৈশ্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতিবিষয়ক বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
এ ছাড়া ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির জানিয়েছিল, উইঘুর সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে চীন সরকারের গণহত্যার অপরাধ সংঘটনের খুবই বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পেয়েছে তারা। উইঘুরদের কাজ করতে বাধ্য করা ছাড়াও বন্দিশিবিরে উইঘুর নারীদের পরিকল্পিতভাবে ধর্ষণ ও নির্যাতনের প্রমাণ পেয়েছে বিবিসি।
উইঘুর সম্প্রদায় মূলত তুর্কি বংশোদ্ভূত একটি জাতিগোষ্ঠী। চীনের বৃহত্তম প্রদেশ জিনজিয়াংয়ের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে তারিম উপত্যকা এলাকার বাসিন্দা উইঘুররা দেশটির সরকারিভাবে স্বীকৃত ৫৬ টি নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর অন্যতম।
সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির জানায়, উইঘুর সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে চীন সরকারের গণহত্যার অপরাধ সংঘটনের খুবই বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পেয়েছে তারা। উইঘুরদের কাজ করতে বাধ্য করা ছাড়াও বন্দিশিবিরে উইঘুর নারীদের পরিকল্পিতভাবে ধর্ষণ ও নির্যাতনের প্রমাণ পেয়েছে তারা।