মঙ্গলবার, ৬ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, রাত ৪:০৫
শিরোনাম :
ঝালকাঠিতে চলমান এসএসসি পরীক্ষায় এক কেন্দ্রের ৮ শিক্ষককে বহিস্কার প্রবাসীর স্ত্রীকে নিয়ে লাপাত্তা ছাত্রদলের সাধারন সম্পাদক রাজশাহীর তানোর থানায় গলায় ফাঁস দিয়ে যুবকের আত্মহত্যা উজিরপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সম্মাননা স্বারক উপহার পেলো মুহাইমিন শুভ মেহেরপুরে ৪৫ বোতল ফেনসিডিলসহ মাদক সমগ্রী নুরজাহান আটক পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের যৌথ নেতৃত্বে একাধিক ইট ভাটায় অভিজান মেহেরপুরে যৌথ বাহিনীর অপারেশন ডেভিল হান্ট মেহেরপুর জেলা পুলিশের বিশেষ কল্যাণ সভা অনুষ্ঠিত মেহেরপুরে জনসম্পৃক্তি বিষয়ক বিএনপি’র কর্মীসভা অনুষ্ঠিত রায়পুরাতে চেয়ারম্যানের বাড়িতে অতর্কিত হামলায় ভাংচুর অগ্নিসংযোগ- লুটপাট ও গুলিবিদ্ধ গৃহবধূ নিহত

করোনা: ২৪ ঘণ্টায় ৭ জনের মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ৪১৪

মহামারি করোনাভাইরাস দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও সাতজনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে ১২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হিসেবে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন আরও ৪১৪ জন। ফলে করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে চার হাজার ১৮৬ জনে। এছাড়া সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন আরও ১৬ জন। ফলে মোট সুস্থ হয়েছেন ১০৮ জন।

বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। অনলাইনে বুলেটিন উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।

বুলেটিনে বলা হয়, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আইইডিসিআরসহ ২১টি প্রতিষ্ঠানে তিন হাজার ৯২১টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে পরীক্ষা করা হয় তিন হাজার ৪১৬টি নমুনা। সব মিলিয়ে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৬ হাজার ৯০টি। নতুন যে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে তার মধ্যে আরও ৪১৪ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ফলে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে চার হাজার ১৮৬ জনে। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে মারা গেছেন আরও সাতজন। এদের মধ্যে পাঁজন পুরুষ ও দুজন নারী। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১২৭ জনে। এছাড়া সুস্থ হয়ে উঠেছেন আরও ১৬ জন। ফলে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা ১০৮।

বুলেটিনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, শিগগির ২ হাজার চিকিৎসক ও ৬ হাজার নার্স নিয়োগ দেয়া হবে। বর্তমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতি সামাল দিতে নতুন করে এই ৮ হাজার চিকিৎসক-নার্স নিয়োগ দেবে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।

তিনি বলেন, বিভিন্ন খবরের কাগজে ও গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে, ভিআইপিদের জন্য আলাদা হাসপাতাল তৈরি করা হচ্ছে- এ বিষয়টি সঠিক নয়। সরকার এরকম কোনো ধরনের ব্যবস্থা করেনি। সবার জন্যই একই হাসপাতাল ও একই চিকিৎসার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কেউ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কোনো ধরনের বিবৃতি দেবেন না। যার কারণে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। যা সরকারি নীতিবহির্ভূত।

কোনো হাসপাতাল লকডাউন হয়নি জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, কোনো হাসপাতালই লকডাউন করা হয়নি এবং হবে না। অন্যান্য হাসপাতালে স্বাভাবিক চিকিৎসা বজায় আছে এবং থাকবে। আমাদের সকল হাসপাতালে যেসব ওষুধ সরকার দিয়ে থাকে, সেগুলো সরবরাহ এখনো অব্যাহত রয়েছে এবং সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে।
ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, নতুন করে আরও তিনটি জেলায় করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়েছে। ফলে মোট আক্রান্ত জেলার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৮টিতে। নতুন আক্রান্ত তিনটি জেলা খুলনা বিভাগের। এখন পর্যন্ত আক্রান্তদের ৮৫ দশমিক ২৬ শতাংশ রাজধানী ঢাকা ও ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা। ৪৫ দশমিক ৫১ শতাংশ ঢাকা নগরের বাসিন্দা। ঢাকা বিভাগের অন্যান্য জেলা মিলিয়ে এ সংক্রমণের হার ৩৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ। মোট আক্রান্তদের মধ্যে পুরুষ ৬৮ শতাংশ ও নারী ৩২ শতাংশ।

তিনি বলেন, দেশে করোনাভাইরাসের সামাজিক সংক্রমণ ঘটেছে। যখন কোথাও সংক্রমণ ঘটলে এর উৎস জানা যায় না বা আক্রান্ত ব্যক্তি কিভাবে সংক্রমিত হলেন তা বোঝা যায় না, তখন সে অবস্থাকে সামাজিক সংক্রমণ বলে। বাংলাদেশ এখন সংক্রমণের তৃতীয় ধাপে রয়েছে।

বুলেটিন উপস্থাপনকালে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে বাড়িতে থাকার এবং স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শ মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়।

গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস এখন গোটা বিশ্বে তা-ব চালাচ্ছে। চীন পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দিয়ে উঠলেও এখন মারাত্মকভাবে ভুগছে ইউরোপ-আমেরিকা-এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চল। এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের প্রায় সাড়ে ২৬ লাখ। এক লাখ ৮৪ হাজার ছাড়িয়েছে মৃতের সংখ্যা। তবে সাত লাখ ২২ হাজার রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।

গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর প্রথম দিকে কয়েকজন করে নতুন আক্রান্ত রোগীর খবর মিললেও এখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এ সংখ্যা। বাড়ছে মৃত্যুও।

প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। নিয়েছে আরও নানা পদক্ষেপ। এসব পদক্ষেপের মূলে রয়েছে মানুষে মানুষে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, বিশেষত ঘরে রাখা। কিন্তু সশস্ত্র বাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশের টহল জোরদার করেও মানুষকে ঘরে রাখা যাচ্ছে না বিধায় করোনাভাইরাসের বিস্তার উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।

সবাইকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা