অনলাইন ডেস্ক::
পারিবারিক কলহের জের ধরে বরগুনার আমতলী পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডে দু’সন্তানের জননী রাবেয়া বেগমকে রড় দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে ঘাতক স্বামী ওয়ালিউল্লাহ। আমতলী থানা পুলিশ ঘাতক স্বামীকে গ্রেফতার করছে।স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানাগেছে, উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের ডালাচাড়া গ্রামের মৃত আঃ ছত্তার হাওলাদারের পুত্র বেসরকারী সংস্থা কোডেক বরগুনা সদর উপজেলার পুরাকাটা ব্যাঞ্চ ম্যানেজার হিসাবে কর্মরত ওয়ালিউল্লাহর সাথে চাওড়া ইউনিয়নের চন্দ্র গ্রামের মৃত আঃ আজিজ মোল্লার কন্যা মোসাঃ রাবেয়া বেগমের সাথে ১২ বছর পূর্বে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে ১০ বছরের একটি কন্যা ও ৪ বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।
বিয়ের পর থেকেই ঘাতক স্বামী ওয়ালিউল্লাহ পৌর শহরে একটি জমিসহ বাড়ী তৈরী করে দেওয়ার জন্য স্ত্রী রাবেয়া বেগম ও তার পরিবারের উপড় চাপ প্রয়োগ করে আসছে। কিছুদিন পূর্বে স্ত্রীর বড় ভাই স্কুল শিক্ষক বশির উদ্দিন বোনের নামে পৌর শহরে জমি ও একটি বাড়ী নির্মাণ করে দেয়। ঘাতক স্বামী ওয়ালিউল্লাহর নামে জমি না দিয়ে স্ত্রী রাবেয়ার নামে এ জমি দেয়াকে কেন্দ্র করে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কয়েক বছর যাবৎ ঝাগড়া বিবাদ চলে আসছে।
এরই ধারাবাহিকতায় আজ (সোমবার) সকাল ৮টার দিকে স্বামী ওয়ালিউল্লাহ বাড়ী আসলে স্বামী- স্ত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে দু’সন্তানকে পাশের রুমে আটকে রেখে স্ত্রী রাবেয়াকে ঘাতক স্বামী ওয়ালিউল্লাহ লোহার এঙ্গেল দিয়ে পিটিয়ে আহত করে এরপরে ইট দিয়ে আঘাত করে মাথা থেথলে দেয়। এতে রাবেয়া বেগম অজ্ঞান হয়ে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ে। প্রতিবেশীরা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলেই গিয়ে স্ত্রী রাবেয়ার মরদেহ উদ্ধার করে ঘাতক স্বামী ওয়ালিউল্লাহকে আটক করে।
এসময় ঘাতক স্বামী ওয়ালিউল্লাহ স্ত্রীকে হত্যার দায় স্বীকার করেন।স্ত্রীর ভাই স্কুল শিক্ষক মোঃ বশির উদ্দিন কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আজ সকাল ৯টার দিকে তার বোন জামাই ওয়ালিউল্লাহ আমাকে মুঠোফোনে জানায়, আপনার বোন রাবেয়াকে মেরে ফেলেছি আপনি এসে লাশ নিয়ে যান। তিনি আরো বলেন, বিয়ের পর থেকে বোন জামাই ওয়ালিউল্লাহ আমার বোনকে পৌর শহরে জমি ও ঘর তৈরী করে দেওয়ার জন্য অত্যাচার করে আসছে। আমি আমার বোনের সুখের জন্য পৌর শহরে জমি ও একটি গৃহ নির্মান করে দিয়েছি। তাতেও তার শান্তি হয়নি, আজ আমার ভাগ্নে ও ভাগ্নি মা হারা হয়ে গেল। এদের দেখার জন্য কেউ রইল না?, আমি আমার বোন হত্যার বিচার চাই।এ ঘটনায় আমতলী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এই মামলায় ঘাতক স্বামী ওয়ালিউল্লাহকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। স্ত্রী রাবেয়া বেগমের লাশ ময়না তদন্তের জন্য বরগুনা জেলা মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।বরগুনা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাঃ) মোঃ মফিজুল ইসলাম ও সহকারী পুলিশ সুপার (আমতলী সার্কেল) সৈয়দ রবিউল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।আমতলী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শাহআলম হাওলাদার বলেন, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে লাশ উদ্ধার করে স্বীকারোক্তি দেওয়া ঘাতক স্বামী ওয়ালিউল্লাহকে গ্রেফতার করে লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।