বুধবার, ৭ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বিকাল ৪:৫৪
শিরোনাম :
ঝালকাঠিতে চলমান এসএসসি পরীক্ষায় এক কেন্দ্রের ৮ শিক্ষককে বহিস্কার প্রবাসীর স্ত্রীকে নিয়ে লাপাত্তা ছাত্রদলের সাধারন সম্পাদক রাজশাহীর তানোর থানায় গলায় ফাঁস দিয়ে যুবকের আত্মহত্যা উজিরপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সম্মাননা স্বারক উপহার পেলো মুহাইমিন শুভ মেহেরপুরে ৪৫ বোতল ফেনসিডিলসহ মাদক সমগ্রী নুরজাহান আটক পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের যৌথ নেতৃত্বে একাধিক ইট ভাটায় অভিজান মেহেরপুরে যৌথ বাহিনীর অপারেশন ডেভিল হান্ট মেহেরপুর জেলা পুলিশের বিশেষ কল্যাণ সভা অনুষ্ঠিত মেহেরপুরে জনসম্পৃক্তি বিষয়ক বিএনপি’র কর্মীসভা অনুষ্ঠিত রায়পুরাতে চেয়ারম্যানের বাড়িতে অতর্কিত হামলায় ভাংচুর অগ্নিসংযোগ- লুটপাট ও গুলিবিদ্ধ গৃহবধূ নিহত

চীনে চালু হলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় কার্বন মার্কেট

অনলাইন ডেস্ক::

যুগ যুগ ধরেই দেশের অর্থনীতিকে উন্নতির শিখরে পৌঁছে দিতে পরিবেশের ভারসাম্য হত্যা করেছে চীন। নতুন নতুন সব অর্থনৈতিক পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে, যেগুলোর কোনোটাই পরিবেশবান্ধব না। সবসময় বেইজিংয়ের ৮৫ কোটি মানুষকে দারিদ্র্যের কবল থেকে বের করাই ছিল চীন সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। অথচ এই দেশই বিশ্বের বৃহত্তম কার্বন নিঃসরণকারী দেশগুলোর একটি।

প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সময় বেশ কিছু পরিবেশবান্ধব প্রকল্প হাতে নিয়েছে চীন সরকার। গ্রিন ফেন্স নামে একটি কার্যক্রমও হাতে নিয়েছে চীন সরকার। এর মধ্য দিয়ে প্লাস্টিকের মান উন্নয়ন করার কথা ছিল। তবে এরপর দেশটিতে প্লাস্টিকের আমদানিই বন্ধ হয়ে যায়। এরপর আবার শি জিনপিং ঘোষণা দেন, ২০৬০ সালের মধ্যেই দেশকে কার্বন নিঃসরণমুক্ত করা হবে।

এবার বিশ্বের সবচেয়ে বড় কার্বন মার্কেট চালু করেছে দেশটি। মার্কেট প্লেসটি কার্যক্রম শুরু করেছে পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে। জলবায়ু পরিবর্তন রোধে যা ভূমিকা রাখবে। কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ বিবেচনা করে এই মার্কেট থেকে প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন নিতে হবে। প্রথমদিকে থার্মাল ইন্ডাস্ট্রিকে এর আওতায় আনা হবে, যেখান থেকে চীনের মোট কার্বন নিঃসরণের ৪০ শতাংশ আসে। শুধু এই খাতই ইউরোপের তুলনায় দ্বিগুণ কার্বন নিঃসরণ করে।

প্রাথমিকভাবে ২ হাজার ২শ’ ২৫ টি কোম্পানি নতুন কার্বন মার্কেটে নিবন্ধন করেছে। ইউরোপের অনেক দেশ এবং যুক্তরাষ্ট্র এরইমধ্যে কার্বন মার্কেট চালু করেছে। বিভিন্ন কোম্পানি এখন বাধ্য হচ্ছে কার্বন নিঃসরণ কমাতে আর পরিবেশবান্ধব প্রকল্পে বিনিয়োগের জন্য। বর্তমানে নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণে আনতে বৃহত্তম জ্বালানি ইন্ডাস্ট্রিকে টার্গেট করা হচ্ছে।

এরপর নিয়মনীতি কঠোর হবে তেল, গ্যাস, স্টিল, অ্যালুমিনিয়াম, সিমেন্ট আর কেমিকেল ইন্ডাস্ট্রির জন্য। তবে এখনই চীনের নতুন কার্বন মার্কেটপ্লেস নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গেছে। বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, প্রতি টন কার্বন নিঃসরণের জন্য কোম্পানিকে গুণতে হবে ৪১ ইউয়ান বা ৬ দশমিক ৩ ডলার। ২০২৫ সাল নাগাদ দিতে হবে ৬৬ ইউয়ান আর ২০৩০ সাল নাগাদ দিতে হবে ৭৭ ইউয়ান।

তবে ২০১৭ সালে নিঃসরণ কমানোর পরিকল্পনায় ছিল, ২০৩০ সালের মধ্যে ৫০ থেকে ১শ’ ডলার জরিমানা। উন্নত দেশগুলোর অর্থনীতির জন্য যে বিষয়টা কোন ব্যাপারই না। এটাই তৈরি করেছে সমালোচনা। বিজ্ঞানী, পরিবেশবাদী সংগঠন আরর সচেতন নাগরিকরা বলছেন, বৃহত্তম কোম্পানিগুলো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করে।

গবেষকরা বলছেন, ২০৩০ সালের মধ্যে বার্ষিক কার্বন নিঃসরণ ২৯ থেকে ৩২ গিগাটন কমিয়ে আনতে হবে, যদি বিশ্ব উষ্ণায়ন দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখার পরিকল্পনা থাকে। এই লক্ষ্যমাত্রা থেকে অনেক অনেক দূরে বিশ্বের বিভিন্ন কোম্পানি, সংস্থা কিংবা সরকার। ভয়াবহ বিপর্যয় রোধে গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ আগামী ১ দশকে ৪৫ শতাংশ কমাতেই হবে।

বাস্তবতা হলো, যতোই গাছ লাগানো হোক না কেন, বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে আগের গতিতে গাছ বড় হচ্ছে না, কয়লাভিত্তিক জ্বালানি প্ল্যান্টের কার্যক্রম আর গ্যাসোলিনের গাড়ি চলাচল অব্যাহত থাকলে কার্বন নিঃসরণ রোধে যতো প্রকল্পই নেয়া হোক, তা কোন কাজেই আসবে না। যদি সত্যি কার্বন নিঃসরণ কমাতে হয়, বৈদ্যুতিক গাড়িতে ভ্রমন করতে হবে, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করতে হবে, মাংস কম খেতে হবে, খাবারের অপচয় কমাতে হবে।

বিশ্বের মোট গ্রিনহাউজ গ্যাসের ২৮ শতাংশই আসে চীন থেকে। ২০২০ সালেও অনেক অনেক কয়লাভিত্তিক প্রকল্প পাস হয়েছে। এরমধ্যে আছে ৪০ গিগাওয়াটের নতুন কয়লা প্ল্যান্ট। যেটা দক্ষিণ আফ্রিকার পুরো কয়লা ইন্ডাস্ট্রির সমান।

সবাইকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা