অনলাইন ডেস্ক::
পানির দাপটে তছনছ হয়ে যাওয়া রাস্তা এখন কর্দমাক্ত। নদীর গতিপথের প্রস্থ এখন আরও চওড়া। বিদ্যুৎ প্রকল্পের আড়াই কিলোমিটারের টানেল কাদাপাথরে অবরুদ্ধ। ভেঙে গেছে পাঁচটি ব্রিজ। কার্যত বিছিন্ন ১৩টি গ্রাম।
ভারতের উত্তরাখণ্ডের চামোলিতে তপোবনের কাছে হিমবাহ ফেটে তীব্র জলোচ্ছ্বাসে রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) ভেসে গেছে কয়েকটি গ্রাম। বন্যার পানি যখন নেমে এসেছিল, তখন তপোবনের কাছে কয়েকটি বিদ্যুৎপ্রকল্পের দুটি সুড়ঙ্গে কাজ করছিল কয়েকশ কর্মী। এর মধ্যে একটি সুড়ঙ্গ থেকে ১৬ জনকে উদ্ধার করা গেলেও বাকি সুড়ঙ্গে আটকে থাকা শ্রমিকদের সঙ্গে এখনও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র সিংহ রাওয়াত।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা ও জি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, এখন পর্যন্ত ১৪ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ প্রায় ১৭০ জন। টানেলে আরও মৃতদেহ থাকতে পারে বলে মনে করছে উদ্ধারকারী দল। তারা চোঙ ব্যবহার করে চিৎকার করে জানার চেষ্টা করছেন ভেতরে কারর আর্তনাদ শোনা যাচ্ছে কি না। কেউ বেঁচে আছে কি না, সেই আশঙ্কায় চলছে খোঁজ।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, উদ্ধারকারীরা অনেক চেষ্টা করেছেন। কিন্তু আটকে থাকে কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। বহু চিৎকার করা সত্ত্বেও কারও সাড়া মেলেনি। হতে পারে তারা একদম ভেতরে আটকে আছেন। তাই কারও কথা শুনতে পাচ্ছেন না।এই বক্তব্যের পর ওই শ্রমিকদের জীবিত থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ বলেই মনে করছেন অনেকে।
হৃষিকেশের ১৩.২ মেগাওয়াটের ওই বিদ্যুৎপ্রকল্পে ২০২০ সাল থেকে উৎপাদন শুরু হয়েছিল। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে সেই প্রকল্প ধ্বংস হয়ে গেছে। তপোবন এলাকার পাঁচ কিলোমিটার নিচের দিকেই তৈরি হচ্ছিল এনটিপিসির ওই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প। সেখানে দুটি সুড়ঙ্গে প্রচুর শ্রমিক কাজ করছিলেন। তার মধ্যে একটি সুড়ঙ্গে আটকে থাকা সবাইকে উদ্ধার করা হয়েছে।
উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র সিংহ রাওয়াত ইন্ডিয়া টুডেকে জানিয়েছেন, অপর সুড়ঙ্গে উদ্ধারকাজ এখনও সেভাবে শুরুই করা যায়নি। আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ ওই সুড়ঙ্গ কাদায় ভর্তি হয়ে গেছে। যে কারণে আইটিবিপির জওয়ানরা সুড়ঙ্গের বেশি ভেতরে ঢুকতেই পারেননি। সোমবার সকাল থেকে ওই সুড়ঙ্গে আইটিবিপি, সেনা ও রাজ্য সরকারের উদ্ধারকারী দল আবার কাজ শুরু করবেন।