অনলাইন ডেস্ক::
চলতি বছরে ১ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়েছে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) ৬ষ্ঠ উপাচার্যের (ভিসি) মেয়াদ। বর্তমান ভিসি ছাড়াই চলছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। ২০ বছর বয়সী এ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরবর্তী উপাচার্য কে হবেন তা নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনে চলছে নানান আলোচনা-সমালোচনা।
এরই মধ্যে উপাচার্য হওয়ার জন্য বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রেড-১ পদমর্যাদা এবং বিভিন্ন শাখায় দায়িত্ব পালনকারী অধ্যাপকরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লবিং-তদবির চালিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে ২১ বছরের পথচলায় ৯৭ জন অধ্যাপক পেয়েছে এ বিশ্ববিদ্যালয়। এদের মধ্যে গ্রেড-১ পদমর্যাদার অধ্যাপকগণ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দাপ্তরিক শাখায় দায়িত্ব পালন করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী শিক্ষকদের সংগঠন ‘প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরাম’ এবং ‘গণতান্ত্রিক শিক্ষক পরিষদ’ থেকে পরবর্তী উপাচার্যের জন্য নিজেদের মধ্যে এক ডজনের বেশি একটি নামের তালিকা ইউজিসি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন জায়গায় জমা দিয়েছেন।
এ তালিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ডিন, সাবেক ডিন, সাবেক বর্তমান রেজিস্ট্রার, শিক্ষক সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নামও রয়েছে। এছাড়া কয়েকজন শিক্ষক ব্যক্তিগতভাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নীতিনির্ধারক, রাজনীতিবিদ, মন্ত্রীসহ বিভিন্ন জায়গা লবিং ও তদবির করছেন বলে জানা গেছে।
বর্তমান উপাচার্য ছাড়াও পরবর্তী উপাচার্য হিসেবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন, অধ্যাপক ড. মো. আনিস খান, অধ্যাপক ড. ভবেন্দ্র কুমার বিশ্বাস, অধ্যাপক ড. ফাহিমা খানম, অধ্যাপক ড. বলরাম রায়, অধ্যাপক ড. বিধান চন্দ্র হালদার, অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আহাদ, অধ্যাপক ড. মো. সাইফুর রহমান, অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজার রহমান, অধ্যাপক ড. বিকাশ চন্দ্র সরকার, অধ্যাপক ড. শ্রীপতি সিকদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. মো. ফজলুল হক প্রমুখ।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দাবি, যিনি দ্রুত শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্ত নিতে পারবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকদের বিভক্ত না করে সবাইকে নিয়ে চলতে পারবে তাকেই যেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি হাবিপ্রবি’র উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেন।
তারা আরও অভিযোগ করেন, বিগত কয়েকবছর দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে উপাচার্য সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগেছেন। প্রশাসন সবসময় অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উদাহরণ দিয়ে বলত তারা সিদ্ধান্ত নিলে আমরাও সিদ্ধান্ত নেবো। কিন্তু উপাচার্যসহ প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা ভুলেই গেছেন হাবিপ্রবিও একটি স্বায়িত্বশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাজু আহমেদ বলেন, শিক্ষার্থীদের স্বার্থে তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু ভর্তি পর থেকেই দেখছি আন্দোলন ছাড়া শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায় হয়নি। হয়ত তারা ভুলেই গেছেন শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্যই তাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে সাবেক শিক্ষার্থী কাবিদ আহমেদ মানিক জানান, অবশ্যই ক্যাম্পাস থেকেই উপাচার্য নিয়োগ দেয়া উচিৎ। ক্যাম্পাসের শিক্ষক ক্যাম্পাসের আবেগকে যেভাবে মূল্যায়ন করবে অন্য কারো পক্ষে সেটা অসম্ভব। তবে যেই আসুক তাকে দায়িত্বশীল হতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ ও প্রকাশনা শাখার পরিচালক অধ্যাপক ড. শ্রীপতি সিকদার জানান, ২০ বছর বয়সী এ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক সিনিয়র শিক্ষক ও যোগ্য শিক্ষক রয়েছেন উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার জন্য। কিন্তু যেখান থেকেই আসুক না কেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি যোগ্য ব্যক্তিকেই উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেবেন।
তিনি আরও জানান, কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উপাচার্য নিয়োগ হয় সেটা বিষয় নয়।তিনি কতটুকু শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্ত এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নে অবদান রাখতে পারবে সেটাই বিষয়।
# আজিজ