অনলাইন ডেস্ক::
ইরাকের ভেতরে ব্যাপক আকারে সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা নিয়ে তুরস্ক। ইরাকে নিজেদের ১৩ জন নাগরিক নিহত হওয়ার পর এ পদক্ষেপ নিচ্ছে এরদোয়ান সরকার। তুরস্কের দাবি, ওই নাগরিকদের কুর্দিস্তান পিপলস পার্টি বা পিকেকে গেরিলারা অপহরণ এবং হত্যা করেছে। পিকেকে’র হাতে নিহত ব্যক্তিদের বেশিরভাগ তুরস্কের সেনাবাহিনী বা পুলিশ বাহিনীর সদস্য।
বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাই এরদোয়ান জোর দিয়ে বলেছেন, তুরস্কের সামরিক বাহিনী সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে পিকেকে গেরিলাদের বিরুদ্ধে যে অভিযান চালাচ্ছে তা অব্যাহত থাকবে। এছাড়া যেসব এলাকা থেকে তুরস্কের জন্য হুমকি আসছে সেসব এলাকায় অভিযানের পরিধি বাড়ানো হবে।
নাগরিকরা নিহত হওয়ার বিষয়ে নিজ দেশের জনগণকে আশ্বস্ত করে এরদোয়ান বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা সন্ত্রাসীদের নির্মূল করার ব্যাপারে তুর্কি সরকারের প্রতিশ্রুতি আরো দৃঢ় করেছে।
এদিকে পিকেকের হাতে ১৩ তুর্কি নাগরিকের হত্যাকাণ্ডের জের ধরে আমেরিকার সঙ্গেও কূটনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হয়েছে তুরস্কের। এ ঘটনায় দেয়া বিবৃতির জেরে আঙ্কারায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়েছে।
মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে তলব করে ওই ১৩ জনের হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে ওয়াশিংটনের নীতি-অবস্থানের বিরুদ্ধে ‘কঠোরতম প্রতিবাদ’ জানানো হয়েছে।
তুরস্ক বলছে, পিকেকে গেরিলারা যে ১৩ তুর্কি নাগরিককে অপহরণ করেছিল ইরাকের উত্তরাঞ্চলে তুরস্কের সেনাবাহিনী তাদের কাছাকাছি পৌঁছার পর তাদেরকে হত্যা করা হয়। এদের ১২ জনকে মাথায় গুলি করে ও একজনকে কাঁধে গুলি করে হত্যা করে পিকেকে বিদ্রোহীরা।
কিন্তু পিকেকে দাবি করছে, উত্তর ইরাকে অবস্থিত তাদের অবস্থানে তুর্কি সেনাবাহিনীর বিমান হামলায় ওই ১৩ জন নিহত হয়েছে।
গত রোববার মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছিল, পিকেকের হাতে তুর্কি নাগরিকদের হত্যাকাণ্ডের খবর সত্যি হয়ে থাকলে আমরা এ কাজের তীব্র নিন্দা জানাই। তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেছেন, আমেরিকার এই ‘শর্তযুক্ত’ নিন্দা ‘উপহাস’ ছাড়া আর কিছু নয়। তিনি আরো বলেন, মার্কিন সরকার পিকেকে এবং ওয়াইপিজি’র মতো ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর’ বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার পরিবর্তে এসব গোষ্ঠীকে সমর্থন করছে।
তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুসওগ্লুও ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের’ দাবিদার দেশগুলোর সমালোচনা করে বলেছেন, এসব দেশ ‘কিন্তু, যদি’ ইত্যাদি পরিভাষা ব্যবহার করে বিষয়টিকে গুরুত্বহীন করে ফেলছে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোয়ান হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, তার দেশের সেনাবাহিনী ইরাকের অভ্যন্তরে কুর্দি বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যাবে।
এদিকে, ইরাকের অভ্যন্তরে তুরস্কের সামরিক অভিযান বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছে ইরাক সরকার।