মঙ্গলবার, ৬ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, রাত ১২:২০
শিরোনাম :
ঝালকাঠিতে চলমান এসএসসি পরীক্ষায় এক কেন্দ্রের ৮ শিক্ষককে বহিস্কার প্রবাসীর স্ত্রীকে নিয়ে লাপাত্তা ছাত্রদলের সাধারন সম্পাদক রাজশাহীর তানোর থানায় গলায় ফাঁস দিয়ে যুবকের আত্মহত্যা উজিরপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সম্মাননা স্বারক উপহার পেলো মুহাইমিন শুভ মেহেরপুরে ৪৫ বোতল ফেনসিডিলসহ মাদক সমগ্রী নুরজাহান আটক পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের যৌথ নেতৃত্বে একাধিক ইট ভাটায় অভিজান মেহেরপুরে যৌথ বাহিনীর অপারেশন ডেভিল হান্ট মেহেরপুর জেলা পুলিশের বিশেষ কল্যাণ সভা অনুষ্ঠিত মেহেরপুরে জনসম্পৃক্তি বিষয়ক বিএনপি’র কর্মীসভা অনুষ্ঠিত রায়পুরাতে চেয়ারম্যানের বাড়িতে অতর্কিত হামলায় ভাংচুর অগ্নিসংযোগ- লুটপাট ও গুলিবিদ্ধ গৃহবধূ নিহত

পোনাবালিয়া বাজারে লিটনের ‘নগর বাউল হেয়ার কাটিং’ যেন মিনি পাঠাগার!

মো নাঈম হোসেন বাবু ::

বাইরে থেকে দেখতে সেলুনটি আট-দশটার মতোই সাধারণ। ভেতরে যেতেই ধারণা পাল্টে যায় স্তরে স্তরে সাজানো বই দেখে। চুল, দাড়ি কাটাতে আসা ব্যক্তিরা সময় কাটাচ্ছেন বই পড়ে।

ঝালকাঠি সদর উপজেলার পোনাবালিয়া বাজারে এ সেলুনটির নাম ‘নগর বাউল হেয়ার কাটিং’। নরসুন্দর লিটনচন্দ্র শীলের এ সেলুনটি এরই মধ্যে সবার নজর কেড়েছে। এটি অনেকের কাছে মিনি পাঠাগার নামেও পরিচিত।

সেলুনের তাকে রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, শরৎচন্দ্রের কালজয়ী সব গল্প, উপন্যাসের বই। দেয়ালে কবি, লেখক ও মনীষীদের বাণী লেখা। আছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মাদার তেরেসা, স্বামী বিবেকানন্দ, লালন সাঁই, কাজী নজরুল ইসলাম, মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল আবু তাহেরসহ অনেকের ছবি।

মালিক লিটনচন্দ্র শীল ব্যান্ডশিল্পী জেমসেরও ভক্ত। তাই সেলুনের নামটাও জেমসের ব্যান্ডের নামানুসারে রেখেছেন ‘নগর বাউল হেয়ার কাটিং’।

সম্প্রতি সেলুনটিতে গিয়ে বই পড়তে দেখা যায় চল্লিশোর্ধ্ব আব্দুল ওহাবকে। তিনি এসেছিলেন চুল, দাড়ি কাটাতে।

আব্দুল ওহাব বলেন, ‘শহর থেকে গ্রামে আসি চুল কাটাতে। এর কারণ এটা একটা মিনি লাইব্রেরি। বই পড়া ছাড়াও এখানে আলাদা একটা স্বাদ পাই। দীর্ঘক্ষণ থাকলেও ধৈর্য হারাতে হয় না। বাচ্চাদের খেলার সামগ্রীও আছে সেলুনে।

সেলুনের পাঠাগারের নিয়মিত পাঠক সালাউদ্দিন মল্লিক বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা বেশি দূর না করলেও লিটন শীল একজন ব্যতিক্রমী মানুষ। সেলুন থেকে তিনি এলাকায় জ্ঞানের আলো ছড়াচ্ছেন।

সেলুন পাঠাগারের উদ্যোক্তা লিটনচন্দ্র বলেন, ভার্চুয়াল দুনিয়ায় বইয়ের পাঠক কমে গেছে। তাই মানুষের বই পড়ার অভ্যাসটাকে বাড়িয়ে দিতে এই উদ্যোগ।

বৃদ্ধ বাবা-মা, স্ত্রী ও এক কন্যাশিশু নিয়ে লিটনের সংসার। সেলুনের উপার্জন দিয়ে পরিবারের খরচ মেটান। কিছু অর্থ বাঁচিয়ে বেই কেনেন।

লিটন বলেন, ‘এটা আমার আত্মতৃপ্তি। বইয়ের মাধ্যমে আমার ইউনিয়ন এবং দেশের কৃষ্টি ঐতিহ্য সবাই জানবেন, কবি-লেখক ও মনীষীদের চিনবেন, স্বাধীনতার ইতিহাস জানবেন। বর্তমান প্রজন্মকে বই পাড়ার ওপর কিঞ্চিৎ আগ্রহ বাড়াতে পারলে আমি আনন্দিত।’

সবাইকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা