বৃহস্পতিবার, ৩০শে নভেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, রাত ৮:০৯
শিরোনাম :
প্রধান মন্ত্রীর নির্দেশই সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ বরিশাল-৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন..! দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেখতে চান রয়টার্সের সাংবাদিকসহ ৮৭ বিদেশি নির্বাচনের আগেই জাতীয় পার্টিতে ভাঙন দেখা দিচ্ছে…! বরিশাল বিভাগীয় সাংস্কৃতিক উৎসব ১৭ ডিসেম্বর আ’লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার বরিশাল-০৫ আসনের নৌকার মাঝি হলেন কর্নেল জাহিদ ফারুক বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আ.লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভা বিভাগীয় কমিশনার মোঃ শওকত আলীর সভাপতিত্বে আইন-শৃঙ্খলা এবং সমন্বয় কমিটির সভা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ১৫ লাখ টাকার বই বিক্রি, বিভাগীয় বইমেলার সমাপ্তি বরিশালে বিসিসি নতুন মেয়রের অভিষেক অনুষ্ঠান, নগরবাসীকে উন্নত সেবা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি

সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক রাহাত খান আর নেই

অনলাইন ডেস্ক:

একুশে পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক রাহাত খান মারা গেছেন। শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টায় রাজধানীর ইস্কাটনের নিজ বাসবভনে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। রাহাত খানের স্ত্রী অপর্ণা খান ফেসবুকে স্বামীর মৃত্যুর খবর জানিয়েছেন।
তিনি ডায়বেটিসসহ নানা বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। এর আগে অসুস্থ হয়ে বেশ কিছু দিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। তাঁর বয়স হয়েছিল প্রায় ৮০ বছর।

রাহাত খানের পারিবারিক সূত্র জানায়, শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টায় বাসাতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তাঁর শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী শনিবার মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে। রাতে লাশ বারডেম হাসপাতালের হিমাগারে রাখা হবে।

গত ২০ জুলাই রাহাত খানকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর আগের দিন বাসায় খাট থেকে নামতে গিয়ে কোমরে ব্যথা পান তিনি। এরপর চিকিৎসকের পরামর্শে এক্স-রে করা হলে পাঁজরে গভীর ক্ষত ধরা পড়ে। এর পাশাপাশি তার শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে জরুরি ভিত্তিতে তাকে বারডেম হাসপাতালের আইসিউতে ভর্তি করা হয়।

দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, কিডনি, ডায়াবেটিসসহ বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন রাহাত খান। যার জন্য তার চিকিৎসা প্রক্রিয়াটা জটিল হয়ে পড়ায় সার্জারি করা যাচ্ছিল না বলে বাসাতেই অবস্থান করছিলেন।

এদিকে রাহাত খাানের মৃত্যুতে গভীর শোক এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর মৃত্যুর খবরে সহকর্মীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে তার স্মৃতি স্মরণ করে শোক প্রকাশ করেন।

রাহাত খানের বর্ণাঢ্য জীবন
রাহাত খান ১৯ ডিসেম্বর ১৯৪০ সালে কিশোরগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। শিক্ষা জীবন শেষ করে রাহাত খান কিছুদিন জোট পারচেজ ও বীমা কোম্পানিতে চাকরি করে ময়মনসিংহের নাসিরাবাদ কলেজে যোগদান করেন। তারপর একে একে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, চট্টগ্রাম সরকারি কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যাপনা করেছেন তিনি।

১৯৬৯ সালে দৈনিক সংবাদ পত্রিকায় তার সাংবাদিকতা জীবনের হাতেখড়ি। পরে তিনি দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় যোগদান করেন। ২০০৯ সাল থেকে তিনি দৈনিক ইত্তেফাকের সহকারী ও ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৩ সালে তার সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় দৈনিক বর্তমান। সবশেষ তিনি দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদ পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

রাহাত খান ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত হন। বর্ণাঢ্য সাংবাদিকতা জীবনে রাহাত খান কথাশিল্প, ছোটগল্প, প্রবন্ধ-নিবন্ধ ও উপন্যাসের নিপুণ কারিগর হয়ে ওঠেন। ১৯৭২ সালে তার প্রথম গল্পগ্রন্থ অনিশ্চিত লোকালয় প্রকাশিত হয়। তার পরবর্তী উপন্যাস ও গল্পগ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে অমল ধবল চাকরি, ছায়াদম্পতি, শহর, হে শূন্যতা, হে অনন্তের পাখি, মধ্য মাঠের খেলোয়াড়, এক প্রিয়দর্শিনী, মন্ত্রিসভার পতন, দুই নারী, কোলাহল ইত্যাদি।

রাহাত খান বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৭৩), সুহৃদ সাহিত্য পুরস্কার (১৯৭৫), সুফী মোতাহার হোসেন পুরস্কার (১৯৭৯), আবুল মনসুর আহমদ স্মৃতি পুরস্কার (১৯৮০), হুমায়ুন কাদির স্মৃতি পুরস্কার (১৯৮২), ত্রয়ী সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৮) এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় একুশে পদক (১৯৯৬) লাভ করেন।

সবাইকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা