অনলাইন ডেক্স:
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের রয়েল রিসোর্টে শনিবার (৩ এপ্রিল) এক নারীসহ হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করে স্থানীয়রা। যদিও শুরু থেকেই সেই নারীকে তার স্ত্রী হিসেবেই দাবি করে আসছিলেন মাওলানা মামুনুল হক।
তবে সেই নারীর পরিচয় প্রকাশ পেতে খুব একটা সময় লাগেনি। ওই নারীর নাম জান্নাত আরা ঝর্না (৩০)। ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের কামারগ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মো. ওলিয়ার রহমান ওরফে ওলি মিয়ার মেজো মেয়ে তিনি। ওলিয়ার রহমান গোপালপুর ইউনিয়নের কামারগ্রাম ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি।
মাওলানা মামুনুল হক ওই নারীকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করে নাম বলেন আমিনা তৈয়বা। যদিও জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তার নাম জান্নাত আরা ঝর্না। ঝর্নার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে দেশের গণমাধ্যম।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও গণমাধ্যমে বিষয়টি প্রচারের পর বিষয়টি জানাজানি হয় সেই নারীর গ্রামেও। তবে, ঝর্নার আগে আরেকটি বিয়ে হয়েছে; দুটি সন্তান আছে। এ কথা সবাই জানলেও দ্বিতীয় বিয়ের খবর জানেন না এলাকাবাসী।
ঝর্নার বাবা ওলিয়ার রহমান বলেন, ‘জান্নাত আরা ঝর্নার নয় বছর বয়সে বিয়ে হয়েছিল হাফেজ শহীদুল ইসলাম ওরফে শহীদুল্লাহ নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে। তার বাড়ি বাগেরহাটের চিতলমারীর চর-কচুড়িয়া গ্রামে। শহীদুল্লাহ ও ঝর্না দম্পতির আব্দুর রহমান (১৭) ও তামীম (১২) নামে দুই পুত্রসন্তান রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পারিবারিক কলহের জেরে আড়াই বছর আগে শহীদুল্লাহ ও ঝর্নার ডিভোর্স হয়ে যায়। দুই বছর আগে পরিবার থেকে পাত্র দেখে মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। পরে নিজেই বিয়ে করেছে ঝর্না। তবে কাকে বিয়ে করেছে তা আমাদের জানায়নি।’
ঝর্ণার মা শিরীনা বেগম বলেন, ‘শুধু একবার ভিডিও কল এর মাধ্যমে স্বামী মামুনুল হককে দেখিয়েছিল, কিন্তু আমরা বুঝতে পারিনি তিনি মাওলানা মামুনুল হক ছিলেন।’
গোপালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মোনায়েম খান বলেন, ‘ঝর্নার বাবা ওলিয়ার রহমান সহজ-সরল মানুষ। কামারগ্রাম চার নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি তিনি। তার মেয়ের আগে বিয়ে হয়েছে। সেই ঘরে দুই ছেলে আছে। পরে বিয়ে হয়েছে কিনা তা আমাদের জানা নেই। গ্রামের কেউ দ্বিতীয় বিয়ের কথা জানেন না।’
প্রসঙ্গত, শনিবার (৩ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় রয়াল রিসোর্টের ৫ম তালার ৫০১ নম্বর কক্ষে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে ‘নারীসহ’ অবরুদ্ধ করে রাখে স্থানীয়রা।
পরে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। মামুনুল হকের দাবি, সঙ্গে থাকা নারী নাম আমিনা তৈয়ব। তিনি মামুনুল হকের দ্বিতীয় স্ত্রী। আমিনাকে সঙ্গে নিয়ে রিসোর্টে ঘুরতে গিয়েছিলেন তিনি।
একই দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মুক্ত হয়ে তিনি ফেসবুক লাইভে গিয়ে বলেন, ‘আপনাদের ভালোবাসার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। সাংবাদিক ও পুলিশ আমার সঙ্গে কোনো খারাপ আচরণ করেনি। কিছু বাইরের লোক খারাপ আচরণ করেছে। আমি আমার দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে এখানে ঘুরতে এসেছিলাম।’ মামুনুল হকের দাবি, সঙ্গে থাকা নারীর নাম আমিনা তৈয়ব। তিনি তার দ্বিতীয় স্ত্রী।