বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। আক্রান্ত হচ্ছেন বহু মানুষ। ভাইরাসের ভায়াল থাবা থেকে মানবজাতিকে রক্ষায় দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। প্রতিষেধক আবিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত সকলকে সামজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছেন তারা।
করোনাভাইরাস নিয়ে কাজ করা অনেক গবেষক মনে করেন, সাধারণ মানুষের তুলনায় ধূমপান করা ব্যক্তিদের অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি বেশি। কারণ করোনাভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার পর ধূমপান করা ব্যক্তিদের ফুসফুস দ্রুত কাজ করা বন্ধ করে দিতে পারে।
তবে বিখ্যাত শিল্পী ডেভিড হকনি সম্প্রতি ব্রিটিশ গণমাধ্যম ডেইলি মেইলকে একটি চিঠি দিয়ে জানান, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি গবেষণা দেখে তার মনে হয়েছে, ধূমপান করোনাভাইরাস থেকে মানুষকে রক্ষা করতে পারে। কারণ কোভিড-১৯ ভাইরাস আক্রান্ত হলে মানুষের ফুসফুসে যে প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়, ধূমপান করলেও মানুষের একই প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তাই ধূমপান করা মানুষদের আগে থেকেই এই ধরনের অবস্থা প্রতিরোধ করার ক্ষমতা তৈরি হয়ে গেছে।
তার এই দাবিটি অনেকে হাস্যকর মনে করে পাত্তা না দিলেও ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের সনামধন্য সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ফ্রাঙ্কোইস ব্যালাক্স বলেন, তার এ দাবি মোটেই ফেলে দেওয়ার মতো নয়। বরং প্রমাণ করার মতো যথেষ্ট তথ্য রয়েছে।
চীনে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের ওপর করা এক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশটিতে সাধারণ রোগীর তুলনায় ধূমপান করা ব্যক্তিরা কোভিড-১৯ ভাইরাসে কম আক্রান্ত হয়েছেন। অর্থাৎ দেশটিতে মোট করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ধূমপান না করা ব্যক্তি ছিলেন ২৬ দশমিক ৬ শতাংশ, আর ধূমপান করা ব্যক্তি ছিলেন ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। এমনকি ধূমপান করা ব্যক্তিদের মধ্যে খুব কম সংখ্যক মানুষের হাসপাতালে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র দেশটির সাত হাজার করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের ওপর সমীক্ষা করে দেখতে পায়, আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে মাত্র ১ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষ ধূমপানে অভ্যস্ত ছিলেন। এদের বেশিরভাগেরই চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল যাওয়া বা আশঙ্কাজনক অবস্থা দেখা দেয়নি।