বিজলী ডেক্স:
শিক্ষা জীবনের সবচেয়ে বড় পাবলিক পরীক্ষা এসএসসির ফলপ্রকাশের এই দিনটি ঘিরে দেশের প্রতিটি স্কুল মুখর হয়ে ওঠে বাঁধভাঙা আনন্দ-উচ্ছ্বাসে। কিন্তু অদৃশ্য শত্রু করোনাভাইরাস কেড়ে নিয়েছে স্কুলমাঠের সেই উল্লাস-উচ্ছ্বাস। আর সেই উচ্ছ্বাসের ছাপ দেখা গেছে এবার সোশ্যাল মিডিয়াজুড়ে। এসব উচ্ছ্বাস নিয়ে আবার ভিন্ন প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছেন কেউ কেউ।
আজ রোববার (৩১মে) ২০২০ সালের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একের পর এক শিক্ষার্থীদের ভালো ফল করার স্ট্যাটাস আসতে থাকে। কোনো জায়গায় শিক্ষার্থী নিজেই নিজের ভালো ফলের খবর জানিয়েছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে সফলতার সাথে উত্তীর্ণ হওয়া শিক্ষার্থীদের আত্মীয়স্বজন সুখবর জানিয়ে পোস্ট করেছেন। কেউ দোয়া চেয়েছেন। কেউবা উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এসব পোস্টে দিনভর মুখরিত ছিল সোশ্যাল মিডিয়া।
ফল প্রকাশের পর শিক্ষার্থী কিংবা অভিভাবকেরা সবাই বাসায় বসে অনলাইনে ফলাফল পেয়ে ঘর বন্দি হয়ে এবার নিরব উৎসব করছে। আশানুরূপ ভালো ফলাফলে চোখে-মুখে ফুটে উঠা সাফল্যের হাসির ছাপ করোনার কারণে সীমাবদ্ধ থাকে সামাজিক মাধ্যমে।
ফেইসবুকে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের অভিনন্দন জানিয়ে এইস এম আব্দুল মান্নান লিখেছেন, ‘‘আজকে যারা এসএসসি ও দাখিল বা সমমানের রেজাল্ট পেয়েছো তোমাদের জন্য আমার পক্ষ থেকে শুভকামনা। দোয়া করি আল্লাহ তোমাদের জীবন উজ্জ্বল করুক।’’
আনাস মুহাইমেন লিখেছেন, ‘‘বাংলাদেশে এই সব পরীক্ষায় এ প্লাস নিয়ে যে মাতামাতি হয় তা ঠিক নয়। এতে যারা এ প্লাস পেতে পারেনি বা বেশি ভাল করতে পারেনি তারা মানসিক চাপে থাকে। যা বিশাল ক্ষতি বয়ে আনে পরবর্তিতে তার শিক্ষা জীবনে। এইসব অসুস্থ প্রতিযোগিতা বন্ধ করা উচিত। লক্ষ লক্ষ ছাত্র ছাত্রী যে মানসিক বৈকল্যের স্বীকার হয় তা কি কেউ লক্ষ রেখেছে? এই সব এ প্লাসই জীবনের সব নয়। এটাকে এত হাইলাইট করে অন্যদের নিচু ভাবাটা নিছক একটা মানসিক অসুস্থতা। রেজাল্ট খারাপ হতেই পারে করো তাই বলে তাকে এত পরিমান সামাজিক চাপে পড়তে হয় যে অনেকে ট্রমায় চলে যায়। রেজাল্ট পদ্ধতি এমন ভাবে করা উচিত যাতে এই অসুস্থ, বন্য মানসিকতা থেকে জাতি বের হয়ে আসতে পারে। কেউ করো থেকে বড় বা ভাল ছাত্র এটা পাবলিকলি প্রমান করা ছাড়া ভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে এই মেধা তালিকা করা উচিত। গুটি কয়েক এ প্লাস পায় আর তা নিয়ে এত চিৎকার দেয়ার কিছু নাই। এটা একটা বৈষম্য তৈরি করে সমাজে। যার ফলাফল ভাল নয়। তাই বিশেষজ্ঞদের এমন পদ্ধতির কথা ভাবতে হবে যাতে কেউ কারো উপরে নয়। কিন্তু তাতেও ভাল প্রমান করা হবে। একটা মানসিক চাপমুক্ত, বৈষম্যমুক্ত জাতি গঠনে এর বিকল্প নেই। যেটা চলছে সেটা স্রেফ একটা বন্য, আদিম, অসুস্থ মানসিকতার চর্চা। বন্ধ হউক এটা।’’
নুর আলম লিখেছেন, ‘‘লাফালাফি করার কিছু নাই। এ কালচার পৃথীবির কোথাও নাই। আমার ক্লাসে যারা সব চেয়ে মেধাবী ছিল, রাত দিন লেখা পড়া করছে তারা বাস্তব জীবনে বড় জোর ৩০/ ৪০ হাজার টাকার বেতনে চাকরী করতেছে। আর যারা ফেল করছে অথবা কোন ভাবে পাশ করছে তারা কেউ বিদেশ গিয়ে অথবা দেশে ছোট খাটো ব্যবসা করে লক্ষ লক্ষ টাকা কামাই করে অনেক ভালো অবস্থানে আছে। অনেকে আবার রাজনৈতিক নেতা। সমাজের হর্তাকর্তা। বর্তমানে বিবিএ এমবিএ পাশ কর ১০/১৫ হাজার টাকা বেতনে চাকরী করে। বাস্তবতা ভিন্ন।’’