অনলাইন ডেস্ক::
চীনের বিরুদ্ধে আবারও কঠিন শর্ত আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এরই অংশ হিসেবে একাধিক চীনা কর্মকর্তা এবং তাদের পরিবারের লোকজনের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তেমনই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে একাধিক চীনা ব্যবসায়িক সংস্থার সঙ্গে। দক্ষিণ চীন সাগরে আগ্রাসনের জবাব দিতেই যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
হোয়াইট হাউসে এক সপ্তাহেরও কম মেয়াদ বাকি থাকা ট্রাম্প সরকার কেন আবার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা নিয়ে ইতোমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে। কূটনীতিকদের দাবি, তাদের এই পদক্ষেপ জো বাইডেন সরকারের সঙ্গে বেইজিংয়ের সুসম্পর্কের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা তাদের প্রতিবেদনে জানায়, চীনের রাষ্ট্রীয় সংস্থা, সে দেশের কমিউনিস্ট পার্টি এবং সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তাদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ট্রাম্প সরকার। পাশাপাশি সে দেশের তেল সংস্থা ‘চায়না ন্যাশনাল অফশোর অয়েল কর্পোরেশন’ এর উপরও নিষেধাজ্ঞা বসানো হয়েছে, যাতে যুক্তরাষ্ট্রের কোনও সংস্থা বা ব্যবসায়ী তাদের সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেনে যুক্ত হতে না পারে। এসবের পাশাপাশি আরও নয়টি চীনা সংস্থার উপর নিষেধাজ্ঞা বসিয়েছে ট্রাম্প। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- বিমান নির্মাণ সংস্থা কোম্যাত এবং মোবাইল ফোন নির্মাণকারী সংস্থা শাওমি কর্প। অভিযোগ, চীনা সেনাবাহিনীর সঙ্গে সরাসরি যোগসূত্র রয়েছে তাদের। আমেরিকার যেসব কোম্পানি ওই সংস্থাগুলোতে বিনিয়োগ করেছে, ২০২১ সালের ১১ নভেম্বরের মধ্যে তাদের সমস্ত ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে ট্রাম্প সরকার।
তবে, এখনো চীনের কোন সংস্থা মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি বলে আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে। তবে চীনা দূতাবাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে, জাতীয় নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে বিদেশি সংস্থাগুলোকে জব্দ করাই যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য। তাদের অভিযোগ, রাজনীতি এবং আদর্শের সঙ্গে অর্থনীতি এবং বাণিজ্যকে একই সুতোয় বেঁধে ফেলছে ওয়াশিংটন। তবে আমেরিকার পররাষ্ট্র সচিব মাইক পাম্পেয়োর দাবি, দক্ষিণ চীন সাগরে চীনা আগ্রাসনের জেরে দক্ষিণ এশিয়ার একাধিক দেশের সার্বভৌমিকতা লঙ্ঘিত হচ্ছে। তাদের পাশে থাকার বার্তা দিতেই চীনের বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ।
এর আগে আলিবাবা, ডেনসেন্ট, বাইদু’র মতো চীনা সংস্থার উপরও নিষেধাজ্ঞা বসানোর পরিকল্পনা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের। তবে শেষ মুহূর্তে তা বাতিল করা হয়। এই মুহূর্তে অ্যাডভান্সড মাইক্রো-ফ্যাব্রিকেশন ইকুইপমেন্ট আইএনসি, লুয়োকাং টেকনোলজি কর্প, বেজিং ঝোংগুয়ানকান ডেভেলপমেন্ট ইনভেস্টমেন্ট সেন্টার, গোউইন সেমিকনডাক্টর কর্প, গ্র্যান্ড চায়না এয়ার কো লিমিটেড, গ্লোবাল টোন কমিউনিকেশন টেকনোলজি কো লিমিটেড এবং চায়না ন্যাশনাল এভিয়েশন হোল্ডিং কো লিমিটেডের মতো সংস্থা আমেরিকার নিষিদ্ধ তালিকায় রয়েছে।