অনলাইন ডেস্ক::
বাংলাদেশে পরীক্ষামূলকভাবে টিকা প্রয়োগের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছে ভারত বায়োটেক। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি ভারতে তাদের টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমতি পেয়েছে। বাংলাদেশের প্রধান চিকিৎসা গবেষণা বিভাগের বরাতে বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
বাংলাদেশে এখনও পর্যন্ত কোনো টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হয়নি। ভারত বায়োটেক অনুমতি পেলে এটিই হবে ১৬ কোটির বেশি জনসংখ্যার দেশটিতে প্রথম কোনো টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ।
ভারতের চিকিৎসা গবেষণা কাউন্সিলের সঙ্গে ওই টিকা তৈরি করেছে ভারত বায়োটেক। চলতি মাসে তাদের টিকার তৃতীয়ধাপের ট্রায়ালের পর্যাপ্ত তথ্য প্রকাশ না করেই সীমিত ব্যবহারের অনুমোদন দেয় দেশটির সরকার। আগের ট্রায়ালের ফলাফলে জানানো হয়, মানবদেহে এ টিকা প্রয়োগ নিরাপদ এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরিতে সক্ষম।
রাষ্ট্রীয়ভাবে পরিচালিত বাংলাদেশে মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের পরিচালক মাহমুদ-উজ-জাহান বলেন, আমরা তাদের প্রস্তাব পেয়েছি। নীতিনির্ধারণী কমিটি প্রস্তাব পর্যালোচনা করবে।
বিস্তারিত জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন তিনি।
ঢাকাভিত্তিক আন্তর্জাতিক উদারময় গবেষণা কেন্দ্র (আইসিডিডিআরবি) ভারত বায়োটেকের পক্ষে বাংলাদেশে ওই টিকার পরীক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছে। অভ্যন্তরীণ নিয়মনীতির কারণে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিষয়টির সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্ট এক ব্যক্তি এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আইসিডিডিআরবি মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে ভারত বায়োটেকের মুখপাত্রের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সিনোভ্যাক বায়োটেকের সম্ভাব্য টিকার শেষধাপের ট্রায়াল বাংলাদেশে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু চীনা কোম্পানির যৌথ বিনিয়োগ প্রস্তাব ঢাকা প্রত্যাখ্যান করায় তা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।
নভেম্বরে ভারতে কোভ্যাকসিনের শেষধাপের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু করে ভারত বায়োটেক। দেশটির শীর্ষ ভ্যাকসিন কর্মকর্তা ভিনোদ কুমার পাল রয়টার্সকে বলেন, বাংলাদেশেও হাজার-বারোশ’ লোকের অংশগ্রহণে ছোট পরিসরে এ পরীক্ষা চালানো যেতে পারে।
বৃহস্পতিবার থেকে ভারতে উৎপাদিত অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির উদ্ভাবিত ভ্যাকসিন গ্রহণ করা শুরু করেছে বাংলাদেশ। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট অক্সফোর্ডের টিকা ব্যাপকহারে তৈরি করছে।
ভারত বায়োটেকের কোভ্যাকসিন কেনার আপাতত কোনো পরিকল্পনা নেই বাংলাদেশের। মার্চের শেষ নাগাদ তাদের টিকার তৃতীয়ধাপের ফলাফলের পর্যাপ্ত তথ্য পাওয়ার কথা।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সচিব আবদুল মান্নান রয়টার্সকে বলেন, আমাদের টিকা সংগ্রহের প্রক্রিয়া আশানুরূপ। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে টিকাদান কর্মসূটি শুরু হবে। ভারত বায়োটেকের কাছ থেকে এ মুহূর্তে টিকা কেনার পরিকল্পনা নেই।
ব্রাজিল একমাত্র দেশ যারা আনুষ্ঠানকিভাবে ভারত থেকে কোভ্যাকসিন কেনার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে।
ভারত বায়োটেক বৃহস্পতিবার ফিলিপিন্সে টিকাটির জরুরি ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে দেশটির কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছে।