অনলাইন ডেস্ক::
পানি আর খনিজের পর মানুষ সর্বোচ্চ ব্যবহার করে বালু। পৃথিবীর পৃষ্ঠে, সমুদ্র সৈকতে যেমন পানির অভাব নেই, তেমনই বালুরও অভাব নেই। কিন্তু এই বালুই নাকি মানুষের কাছে দুর্লভ হতে চলেছে।
জাতিসংঘের পরিবেশবিষয়ক সংস্থা ইউএনইপির পরিবেশ বিজ্ঞানী বলছেন, আমরা মনে করি আমাদের আশপাশে অনেক বালু। এটা আমরা কল্পনাও করতে পারি না, একসময় বালু দুর্লভ হয়ে যাবে আমাদের কাছে। কোথাও কোথাও এমনটা হতে শুরু করেছে।
পরিবেশবিজ্ঞানী প্যাসকেল পেডুজ্জি বলেন, আগামী দশকে কী হবে, এটা আমাদের ধারণার বাইরে, কারণ আমরা কেউ ভবিষ্যতের চিন্তা করছি না। অতিরিক্ত চাহিদার কারণে সারাবিশ্বে অতিরিক্ত বালু সরবরাহ আর ব্যবহৃত হচ্ছে। ভবিষ্যতে বালুর সরবরাহ সংকটে পড়তে হবে।
ইউএনইপি’র সুইজারল্যান্ডের জেনেভার গ্লোবাল রিসোর্স ইনফরমেশন ডাটাবেজের পরিচালক পেডুজ্জি বলেন, এখনই অধৈর্য হওয়ার মতো সময় আসেনি, কিন্তু বালু উত্তোলন আর ব্যবহারের বিষয়ে দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের সময় এসেছে।
সিমেন্টের উৎপাদন আর ব্যবহারের তথ্য খুঁজলেই বালুর ব্যবহারের তথ্য পাওয়া যাবে।
জাতিসংঘ বলছে, প্রতিবছর ৪শ’ কোটি টন সিমেন্ট তৈরি হয় সারাবিশ্বে। বালু ব্যবহার করে চীনে সবচেয়ে বেশি অবকাঠামো স্থাপনা গড়ে উঠছে। সারাবিশ্বের অবকাঠামো খাতে ব্যবহৃত বালুর ৬০ শতাংশই চীন ব্যবহার করে। পরিসংখ্যান বলছে, এক টন সিমেন্ট তৈরিতে ১০ টন বালু ব্যবহার করা হয়। তার মানে প্রতিবছর সারাবিশ্বে ৪ থেকে ৫ হাজার টন বালু ব্যবহৃত হয় সিমেন্ট উৎপাদনে। এই পরিমাণ বালু দিয়ে ২৭ মিটার উঁচু আর ২৭ মিটার প্রশস্ত দেয়াল তৈরি করে সারা পৃথিবীকে ঢেকে ফেলা যাবে। নগরায়ন আর শিল্পায়নের কারণে গত দুই দশকে সারাবিশ্বে বালুর ব্যবহার তিন গুণ বেড়েছে।
পানি আর বাতাসের মধ্য দিয়ে পাথর থেকে প্রাকৃতিকভাবে বালু তৈরি অনেক বেশি সময়সাপেক্ষ। জাতিসংঘ এর আগেও সতর্ক করেছিল বালু মাফিয়াদের বিষয়ে। যারা কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, সিয়েরা লিওন আর কেনিয়াতে সংঘবদ্ধভাবে কাজ করে।
বলা যায় আমাদের পুরো সমাজই বালু দিয়ে তৈরি। রাস্তা, সেতু, রেলপথ, সব অবকাঠামোই বালু দিয়ে তৈরি। জানালা, কম্পিউটার স্ক্রিন কিংবা স্মার্টফোন তৈরিতেই ব্যবহৃত হয় বালু। সারাবিশ্বের প্রায় সব দেশেই আছে বালু।