বৃহস্পতিবার, ৮ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, সন্ধ্যা ৬:৫৭
শিরোনাম :
ঝালকাঠিতে চলমান এসএসসি পরীক্ষায় এক কেন্দ্রের ৮ শিক্ষককে বহিস্কার প্রবাসীর স্ত্রীকে নিয়ে লাপাত্তা ছাত্রদলের সাধারন সম্পাদক রাজশাহীর তানোর থানায় গলায় ফাঁস দিয়ে যুবকের আত্মহত্যা উজিরপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সম্মাননা স্বারক উপহার পেলো মুহাইমিন শুভ মেহেরপুরে ৪৫ বোতল ফেনসিডিলসহ মাদক সমগ্রী নুরজাহান আটক পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের যৌথ নেতৃত্বে একাধিক ইট ভাটায় অভিজান মেহেরপুরে যৌথ বাহিনীর অপারেশন ডেভিল হান্ট মেহেরপুর জেলা পুলিশের বিশেষ কল্যাণ সভা অনুষ্ঠিত মেহেরপুরে জনসম্পৃক্তি বিষয়ক বিএনপি’র কর্মীসভা অনুষ্ঠিত রায়পুরাতে চেয়ারম্যানের বাড়িতে অতর্কিত হামলায় ভাংচুর অগ্নিসংযোগ- লুটপাট ও গুলিবিদ্ধ গৃহবধূ নিহত

মৃত্যুর পর মওদুদ আহমদের যে ছবি ভাইরাল

অনলাইন ডেস্ক::

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ মারা গেছেন। মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা পৌনে ৭টায় সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এ প্রবীণ রাজনীতিক। এরই মধ্যে তার কয়েকটি ছবি এখন ভাইরাল হয়েছে।

ছবিগুলো ২০১৯ সালের ৭ জুন (শুক্রবার) ঈদের তৃতীয় দিনের। সেই ছবিতে দেখা যাচ্ছে ঈদ উদযাপন করতে গ্রামের বাড়িতে এসে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের নিজ বাড়ির পুকুরে সাঁতার কাটেন তিনি।

এ ছবির বিষয়ে নোয়াখালীর সিরাজপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী সৈকত জানান, দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে সেদিন মানিকপুর গ্রামের নিজ বাড়ির পুকুরে দীর্ঘক্ষণ সাঁতার কেটে ঈদ আনন্দ উদযাপন করেছিলেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।

সে সময় তিনি নেতাকর্মীদেরকে নিয়মিত সাঁতার কাটার ও ব্যায়াম করার পরামর্শও দেন। এ ছাড়া ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী বিষয়টি জরুরি বলেও মন্তব্য করেছিলেন মওদুদ আহমদ। পাশাপাশি সবাইকে নিয়মিত সাঁতার কাটায় উদ্বুদ্ধ করতে উপস্থিত সবার প্রতি আহ্বানও জানিয়েছিলেন  তিনি।

মওদুদ আহমদ পেশায় স্বনামধন্য আইনজীবী। কিন্তু সে পরিচয় ছাপিয়ে দেশবরেণ্য রাজনীতিবিদ তিনি। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকলেও তিন দফা দল পাল্টে বিএনপি, জাতীয় পার্টি পরে আবার বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন এই নেতা। ক্যারিয়ারের সূচনালগ্ন থেকেই নানাবিধ কর্মকাণ্ডের কারণে যেমন নন্দিত হয়েছেন, আবার বারবার দল বদলে হয়েছেন সমালোচিতও।

১৯৪০ সালের ২৪ মে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম নেন মওদুদ আহমদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাস করে লন্ডন থেকে বার অ্যাট ‘ল’ ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। এরপর দেশে এসে উচ্চ আদালতে দায়িত্ব পালন শুরু করেন ব্যারিস্টার মওদুদ।

রাজনীতির শুরুটা হয় আওয়ামী লীগের হাত ধরে। মুক্তিযুদ্ধের আগে তিনি কাজ করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে। ১৯৭৭-এর পর মরহুম রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সরকারে উপদেষ্টা থাকা অবস্থায় মন্ত্রিত্ব পান। এরপর তাকে দায়িত্ব দেয়া হয় উপপ্রধানমন্ত্রীর। এমনকি বিএনপি অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন এই মওদুদ আহমদ।

জিয়া নিহত হওয়ার পর হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ক্ষমতায় এলে ১৯৮১ সালে তথ্যমন্ত্রী হন তিনি। এরপর কয়েক দফায় উপপ্রধানমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী ও পরে উপরাষ্ট্রপতির দায়িত্বও পান এই রাজনীতিবিদ। ১৯৯০ সালে এরশাদ সরকারের পতন হলেও থেকে যান জাতীয় পার্টিতেই। পরে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে তৎকালীন বিরোধী দল বিএনপিতে যোগ দেন। স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্বও পালন করেন তিনি।

শিল্প, পরিকল্পনা, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক, বিদ্যুৎ, পানি, রেল, সড়ক ও যোগাযোগ এবং টেলিযোগযোগ মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালন করেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। অন্যদিকে, নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ থেকে পাঁচবার সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিতও হয়েছেন তিনি।

জীবনের পড়ন্ত সময়ে শারীরিক নানা জটিলতায় ভুগেছেন। বিশেষ করে হৃদযন্ত্রের সমস্যাটিই প্রকট হয়ে দাঁড়ায়।

সবশেষ সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮১ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ব্যারিস্টার মওদুদ।

ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ১৯৪০ সালের ২৪ মে ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির (বর্তমান বাংলাদেশ) নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মাওলানা মমতাজ উদ্দিন আহমদ এবং মা বেগম আম্বিয়া খাতুন। ছয় ভাইবোনের মধ্যে মওদুদ আহমদ চতুর্থ।

সবাইকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা