অনলাইন ডেস্ক::
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পর ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে। নতুন সামরিক জান্তার বৈঠক শেষে এ তথ্য জানিয়েছেন মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লেইং। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে, দেশটিতে সুষ্ঠু ও সত্যিকারের বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা অনুশীলনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কমান্ডার-ইন-চিফ সিনিয়র জেনারেল মিং অং হ্লাইং। তবে, কবে নাগাদ নির্বাচন দেওয়া হতে পারে সে বিষয়ে কোনো সময়সীমা জানায়নি মিয়ানমার সেনাবাহিনী।
সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকালে অভ্যুত্থানের পরপরই এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করেছে তারা।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৮ নভেম্বরের নির্বাচনে অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) ৮৩ শতাংশ আসন পায়। ২০১১ সালে সামরিক শাসন শেষ হওয়ার পর দেশটিতে এটি দ্বিতীয় নির্বাচন ছিল।
তবে ভোটের ফলাফল মেনে নেয়নি সামরিক বাহিনী। তারা সুপ্রিম কোর্টে দেশটির প্রেসিডেন্ট এবং নির্বাচন কমিশনের প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। এরপর সোমবার সকালে সু চি, দেশটির প্রেসিডেন্ট উইন মিনতসহ বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে আটক করে অভ্যুত্থান ঘোষণা করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী।
সকাল থেকে জরুরি অবস্থা জারির পর দেশটির রাজধানী নাইপিদোতে সব রকমের যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবে সামরিক বাহিনী নিয়ন্ত্রিত টেলিভিশন মায়াবতীর সম্প্রচার চালু রয়েছে।
সামরিক বাহিনী নিয়ন্ত্রিত টেলিভিশনে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, গত ৮ নভেম্বরের বহুদলীয় সাধারণ নির্বাচনে যে ভোটার তালিকা ব্যবহার করা হয়েছে তাতে গড়মিল পাওয়া গেছে। এ বিষয়টির সমাধান করতে ব্যর্থ হয়েছে ইউনিয়ন নির্বাচন কমিশন। ভোটার তালিকা নিয়ে জালিয়াতি করা হয়েছে, যার ফলে গণতন্ত্র নিশ্চিত সম্ভব হচ্ছে না। বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে অস্বীকৃতি জানানো এবং উচ্চ ও নিম্নকক্ষে ব্যবস্থাগ্রহণে ব্যর্থ হয়েছে পার্লামেন্ট।
মিয়ানমার সেনাবাহিনী বলছে, এই সমস্যার সমাধান না হলে এটি গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করবে। আইন অনুযায়ী, এই সমস্যার অবশ্যই সমাধান করতে হবে। এ কারণে ২০০৮ সালের সংবিধানের ৪১৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। আগামী এক বছর এই জরুরি অবস্থা বহাল থাকবে।
মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে ক্ষমতা গ্রহণ করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। সেইসঙ্গে মিয়ানমারের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন দেশটির সামরিক বাহিনী সমর্থিত ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং সাবেক জেনারেল মিন্ট সোয়ে। ক্ষমতা গ্রহণের পরই এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন তিনি। এর আগে সোমবার ভোরে দেশটির রাষ্ট্রপতি উইন মিনত ও ক্ষমতাসীন দলের নেত্রী অং সান সু চিসহ দলের শীর্ষ নেতাদের আটক করে সেনাবাহিনী।