অনলাইন ডেস্ক:;
ময়মনসিংহের গৌরীপুরে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান শুভ্র হত্যা মামলায় পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলাম এবং উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক রিয়াদুজ্জামান রিয়াদসহ ১৯ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দিয়েছে ডিবি পুলিশ। অভিযুক্তদের মধ্যে আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ রফিকের দুই ভাই এবং বিএনপি নেতা রিয়াদের দুই ভাইকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে।
বুধবার (০৫ মে) বিকেলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ কামাল আকন্দ ৪নং আমলী (গৌরীপুর) আদালতে জমা দেন।
আসামিরা হলেন- গৌরীপুর পৌরসভার বর্তমান মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সৈয়দ রফিকুল ইসলাম (৫৫), তাঁর ছোট ভাই সৈয়দ তৌফিকুল ইসলাম (৪১) ও সৈয়দ মাজাহারুল ইসলাম জুয়েল (৩৮), উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও মইলাকান্দা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান রিয়াদ উজ্জামান রিয়াদ (২৯), তাঁর ছোটভাই মাসুদ পারভেজ কার্জন (২৭) ও সাকিব আহমেদ রেজা (২৮), স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মোজাম্মেল হক (৩০), রিয়াদের খালাতো ভাই খাইরুল ইসলাম (৩০), ছাত্রদলকর্মী রিফাত (২৫), ট্রাক-চালক মো. আবু হানিফা (৩০), স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা জাহাঙ্গীর আলম (২৮), যুবদলকর্মী মজিবুর রহমান (৩০), ছাত্রদল কর্মী শরীয়তউল্লাহ ওরফে সুমন (৩৩), যুবদলকর্মী রাসেল মিয়া (৩২)। এরা সবাই এজাহারনামীয় আসামি।
এছাড়া তদন্তকালীন সাক্ষ্য প্রমাণে আরও পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কামাল মিয়াকে (৩৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পলাতক রয়েছেন মো. মাইনউদ্দিন (২০), শরীফুল ইসলাম নাঈম (২২), রুহুল আমীন (২৮), শাহজাহান মিয়া (২৫)।
অভিযুক্ত আসামিদের মধ্যে তিনজন উচ্চ আদালতের জামিনে মুক্ত আছেন। নয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগারে জেলহাজতে আছেন। বাকিরা পলাতক রয়েছেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা সংস্থার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ কামাল আকন্দ জানান, মূলত রাজনৈতিক বিরোধ এবং পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই শুভ্র হত্যার ঘটনাটি ঘটে। ২০১৭ সালে নিহত শুভ্র জীবন নাশের আশঙ্কায় পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌরসভার মেয়র সৈয়দ রফিকের বিরুদ্ধে থানায় জিডি করেছিলেন।
পুলিশ সুপার মোহা. আহমার উজ্জামান জানান, মামলায় এজাহারনামীয় আসামি ছিলেন ১৪ জন। এর বাইরের তদন্তকালীন ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা পেয়ে আরও পাঁচজনকে নতুন আসামি করে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। তদন্তে সরাসরি হত্যাকাণ্ডে জড়িত ও পরিকল্পনায় যারা জড়িত প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের বিরুদ্ধেই অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে।
গত বছরের ১৭ অক্টোবর শনিবার রাত রাত সাড়ে ১০টার দিকে গৌরীপুর পৌর শহরের মধ্যবাজার এলাকার মরিচ মহালে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা মাসুদুর রহমান শুভ্রকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করে অভিযুক্ত আসামিরা। ঘটনার পর নিহতের ছোট ভাই আবিদুর রহমান প্রান্ত বাদী হয়ে ১৪ জনের নামোল্লেখ করে গৌরীপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ২২ অক্টোবর মামলার তদন্তভার পায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।