অনলাইন ডেস্ক ॥ জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার হ্যালিপ্যাডের পুকুরে অবৈধভাবে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করায় হুমকির মুখে পরেছে হ্যালিপ্যাড, সরকারী সড়ক, পুকুর পাড়ের একটি মাদ্রাসা, সরকারী অর্থে পুকুর পাড়ের পাইলিংসহ বিভিন্ন স্থাপনা। উপজেলা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে গত ১৫দিন ধরে পুকুর থেকে বালু উত্তোলনের ফলে ইতোমধ্যে পুকুর পাড়ের দক্ষিণাংশে ফাঁটল দেখা দিয়েছে। ফলে স্থানীয়দের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সরকারী পুকুরে অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধে এলাকাবাসী জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
আজ রবিবার সকালে ড্রেজার মালিক জন বাড়ৈ মোবাইল ফোনে বলেন, গত ১৫দিন পূর্বে আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সামনে বসে স্থানীয় ঠিকাদার শফিকুল ইসলাম শকুল সেরনিয়াবাত হ্যালিপ্যাডের সরকারী পুকুর থেকে উপজেলা পরিষদের নতুন ও পুরাতন ভবনের চারপাশে এবং নির্মাণাধীন একটি সরকারী সড়কে বালু দেওয়ার জন্য বলেছেন। সে অনুযায়ী আগৈলঝাড়া উপজেলার একমাত্র হ্যালিপ্যাডের সরকারী পুকুরে ড্রেজার বসিয়ে তিনি বালু উত্তোলন করে উপজেলা পরিষদ ও শকুল সেরনিয়াবাতের নির্মাণাধীন সড়কে বালু দিয়ে আসছেন। ইতোমধ্যে বালু উত্তোলণ বাবদ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সামনে বসে শকুল সেরনিয়াবাত তাকে এক লাখ টাকা পরিশোধ করেছেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
স্থানীয় নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সরকারী পুকুর থেকে অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলনের জন্য প্রতিফুট ১৪ টাকা দরে পাঁচ লাখ ফুট বালু উত্তোলনের জন্য উপজেলা প্রশাসনের সাথে ঠিকাদার শকুল সেরনিয়াবাত চুক্তি করেছেন। সে অনুযায়ী ঠিকাদার অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে একমাত্র হ্যালিপ্যাডের পুকুর থেকে বালু উত্তোলন করে আসছেন।
চুক্তির অভিযোগ অস্বীকার করে ঠিকাদার শফিকুল ইসলাম শকুল সেরনিয়াবাত বলেন, আমি উপজেলা পরিষদের নতুন ভবনের ঠিকাদার। বালু ভরাটের বিষয়ে ইউএনও সাহেব এবং চেয়ারম্যানরা সম্পৃক্ত আছে বলে আমি মনে করি। এ বিষয়ে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই।
এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত বলেন, বালু দিয়ে উপজেলা পরিষদের মাঠ ভরাট হচ্ছে। তবে কোন জায়গা থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে তা আমার জানা নেই। এটা ইউএনও সাহেব বলতে পারবেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপুল চন্দ্র দাস বলেন, গত ৩০ জুলাই উপজেলা পরিষদের নবনির্মিত ভবন উদ্বোধণ করা হয়েছে। ভবনের চারপাশ নিচু ছিলো। তাই উপজেলা পরিষদের পুকুর থেকে পরিষদের জায়গায় বালু ভরাট করা হচ্ছে। ঠিকাদার কর্তৃক নির্মানাধীন সড়কে বালু দেওয়ার বিষয়ে প্রথমে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। পরে বলেন-ঠিকাদার শকুল সেরনিয়াবাত নির্মানাধীন সড়কে বালু দিয়েছে বলে আমি শুনেছি। তবে রাস্তায় বালু দেওয়ার বিষয়টি শকুল সেরনিয়াবাত অস্বীকার করেন। বালু ভরাটের জন্য অর্থ বরাদ্দের বিষয়ে ইউএনও বলেন, এখনও কোন বরাদ্দ দেয়া হয়নি। তবে টিআর-কাবিখার বরাদ্দ আসলে তা দিয়ে মেকাপ করা হবে। ড্রেজার বৈধ না অবৈধ এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও বলেন, বালুতো সবাই ড্রেজার দিয়েই উত্তোলন করে, সেটা বৈধ হোক আর অবৈধ হোক। আর উপজেলা পরিষদের পুকুর থেকে উপজেলা পরিষদের মাঠে বালু ভরাট করা হচ্ছেম এখানে বৈধ অবৈধর প্রশ্নই ওঠেনা। বালু উত্তোলনের ফলে পুকুর পাড়ের পাইলিং, সড়ক ও স্থাপনা হুমকির বিষয়ে তিনি বলেন, এটা আমরা সেফটি চিন্তা করেই করেছি।