স্টাফ রিপোর্টার:
বরিশালে আল্লাহ’র নামে ছেড়ে দেওয়া ষাড় চুরি পরবর্তী বিক্রি করে সমুদয় অর্থ হজম করেছেন সিটি কর্পোরেশনের ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কেফায়েত হোসেন রনি। সাম্প্রতিকালে মিডিয়াকর্মীদের অনুসন্ধানে এসব তথ্য উপাত্ত্ব প্রকাশ হয়ে গেলে বিষয়টি নিয়ে শুরু হয় তোলপাড়। ফলে রাজনৈতিক এবং সাজিকভাবে বেকায়দায় পড়েন রনি। কিন্তু তিনি দাবি করে আসছিলেন- ষাড় বিক্রির সমুদয় অর্থ ৭০ হাজার টাকা স্থানীয় মসজিদ মাদ্রায় বিতরণ করেছেন এবং মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদকে মিথ্যে দাবি করে নিজের ফেসবুক পেইজে বিভিন্ন মাদ্রাসায় টাকা বিতরণ প্রমাণস্বরুপ রসিদ জুড়ে দেওয়া হয়।
এখানেও তিনি মিথ্যের যে আশ্রয় নিয়েছেন সেই বিষয়টি এক সংবাদকর্মীর অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে। শনিবার সরেজমিনে রনির কাছে জানতে চাইলে ওই সংবাদকর্মীর ওপর বেজায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন। এমনকি সন্ত্রাসীদের নিয়ে তাকে লাঞ্ছিত করতে উদ্যত হন।
একজন জনপ্রতিনিধির এমন আচারণে মিডিয়াকর্মীরা নয়, ঘটনাস্থলে উপস্থিত অনেকেই হতাশ বাকরুদ্ধ হয়েছেন। কিন্তু তিনি বিশেষ একটি মহলের পরিচয় দিয়ে চলায় তাকে কেউ প্রতিরোধে অগ্রসর হয়নি।
তবে আল্লাহ’র নামে ছেড়ে দেওয়া গরু চুরি ও সংবাদকর্মীদের ওপর চড়াও হওয়ার বিষয়টি নিয়ে নিজ এলাকা পলাশপুরসহ গোটা নগরীতে তীব্র সমলোচনা চলছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ কেফায়েত হোসেন রনি গত বছরের ৩০ জুলাই নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ’র নাম ভাঙিয়ে এলাকায় একের এক বিতর্কিত কর্মকান্ড করে চলছেন এবং সর্বকনিষ্ঠ কাউন্সিলরের তকমা লাগিয়ে তিনি ঘুরছেন।
যদিও রনি কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়া নিয়েও রয়েছে নানান বিতর্ক। নির্বাচনে প্রতিদ্বনি›দ্ব করা একাধিক প্রার্থীর রনির বিরুদ্ধে কেন্দ্র দখলের অভিযোগ তুলেছিল। এমনকি আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীও একই অভিযোগ করেছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়- আল্লাহ’র নামে ছেড়ে দেওয়া একটি বিশালাকারের ষাড় সড়ক থেকে ধরে নিয়ে যান কাউন্সিলর রনি। সেই ষাড়টি এবারের ঈদুল আজহায় মাসুদ নামে এক ব্যক্তি কোরবানী করেন। পরে জানা যায় কাউন্সিলর রনি ব্যবসায়ী মাসুদের কাছ থেকে ষাড়টি বিক্রি করে ৭০ হাজার টাকা নিয়েছেন। যদিও ষাড়টি বাজার মুল্য ১ লাখ ২০ হাজার টাকার ওপরে বলে অনেকেই দাবি করেছেন।
কিন্তু রনির দাবি ষাড় বিক্রির সমুদয় অর্থ স্থানীয় একাধিক মসজিদ মাদ্রসায় বিতরণ করেছেন। বিশেষ করে ষাড় বিক্রির অর্থ হজম হওয়ার একটি সংবাদ প্রকাশ পাওয়ার নিজের ফেসবুক পেইজে তিনি এই দাবি করেন।
কিন্তু তিনি যেসব মাদ্রাসা মসজিদে অর্থ বিতরণ করেছেন বলে দাবি করলেও সেসব প্রতিষ্ঠানের কোন অস্থিত্ব নেই। আবার তিনি যে মাদ্রাসাটিতে সবচে বেশি অর্থাৎ ৩৫ হাজার টাকা দিয়েছেন দাবি করেন সেখানে সাইন বোর্ড ব্যতিত কিছুই প্রতীয়মাণ নয়। তবে ঈদুল আজহার দিন স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় ঘুরে তিনি সেখানকার শিক্ষার্থীদের ৭০ টাকা দিয়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
কাউন্সিলর রনির এমন মিথ্যের আশ্রয় নেওয়া এবং চুরি করে গরু বিক্রি করে দেওয়া নিয়ে ওয়ার্ডবাসীও সংক্ষুব্ধ।
অথচ রনির দাবি গরুটি পেয়ে মাসুদের কাছে রাখতে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বেশ কয়েক মাস অতিক্রম হলে তিনি রাখবেন না বলে জানিয়ে দেন। এই কারণে ষাড়টি কোরবানীর আগে তাকে দিয়ে ৭০ হাজার টাকায় দিয়ে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে সেই টাকাগুলো মাদ্রাসায় বিতরণ করা হয়েছে। এর আগে গরুটি পেয়ে থানায় মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে এবং বেশ কয়েকটি পত্রিকায় খবর প্রকাশ করা হয় বলেও দাবি করেন রনি।
সাংবাদিক লাঞ্ছিত করার বিষয়টি জানতে রনিকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।