শিগগিরই ভাসানচরে প্রথমবারের মতো স্থানান্তর হতে যাচ্ছে রোহিঙ্গাদের একটি দল। সেখানে কার্যক্রম পরিচালনা করতে প্রস্তুত এনজিওগুলোও। শুরুর দিকে, আপত্তি থাকলেও, সরেজমিন পরিদর্শন শেষে সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন দেশি বিদেশী বেসরকারি সংস্থাগুলো। তাদের আশা, প্রথম ধাপের স্থানান্তর শেষে, বাকি রোহিঙ্গাদেরও কক্সবাজারের ঝুঁকিপূর্ণ জীবন থেকে সরিয়ে আনা সম্ভব হবে।
আর মাত্র কয়েকদিন। তারপরই ভাসানচরে শুরু হবে রোহিঙ্গাদের বসবাস। তাই নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের যাত্রা ভাসানচর আশ্রয়ন প্রকল্পে।
কক্সবাজারের ঘুপচি ঘর থেকে ভাসানচরে আসবেন মিয়ানমার থেকে জোরকরে তাড়িয়ে দেয়া রোহিঙ্গারা। শোভন জীবনের স্বাদ দিতে প্রস্তুত পাকা ভবন, স্কুল, ডে কেয়ার সেন্টার, মসজিদ আর বাজার। ৪টি কমিউনিটি ক্লিনিক আর ২০ শয্যার ২টি পুরোদস্তুর আধুনিক হাসপাতালও তৈরি। প্রস্তুত চিকিৎসক আর স্বাস্থ্য কর্মীরাও। চিকিৎসা সামগ্রীর যোগানও আছে পর্যাপ্ত।
হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন বলেন, আমাদের দুইটা হাসপাতালের জন্য সব আসপাবপত্র চলে এসেছে। দুই হাসপাতালের জন্য দুইজন চিকিৎসক দেয়া হয়েছে।
রোহিঙ্গাদের প্রথম দলকে ভাসানচরে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও। ২২ এনজিও একশ’র কাছাকাছি কর্মী, প্রতিনিধি সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন ভাসানচর। কক্সবাজারের ক্যাম্পের সাথে তুলনা করছেন এখানকার আবাসস্থল, পরিবেশ-সামগ্রিক জীবন মান।
মাল্টি সার্ভ ইন্টারন্যাশনালের সিইও মোহাম্মদ জুবায়ের বলেন, শিক্ষা-দীক্ষা, নামাজের ব্যবস্থা তাদের চলাচলসহ সব ধরণের ব্যবস্থাই এখানে করা হয়েছে।
পালসের বাংলাদেশের প্রতিনিধি তুহিন সেন বলেন, এখানের পরিবেশ কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে অনেক ভালো। আমরা মূলত স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা নিয়ে কাজ করি। এখানে আমরা প্রাথমিকভাবে স্বাস্থ্য নিয়েই কাজ করবো।
সরকারের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে আগেই। প্রস্তুতি এনজিওগুলো। আর এর মধ্য দিয়ে আশ্রয়ন প্রকল্প হিসেবে ভাসানচরের যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে কিছুদিনের মধ্যেই।
ভাসানচর আশ্রয়নের প্রকল্প উপ-পরিচালক কমান্ডার মোহাম্মদ আনোয়ারুল কবির বলেন, কক্সবাজারে তাদের গুছিয়ে নিয়ে কাজ করতে হয়েছে। আর এখানে সবকিছু আগে থেকেই ঠিক করা আছে।
১ লাখ ১ হজার ৩৬০ জন রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিতে, ভাসানচরে আছে ১৪৪০টি ঘর, ১২০টি সাইক্লোন সেন্টার। সোলার প্যানেল আর জেনারেটরের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়েছে বিদ্যুত সুবিধা। চারটি ওয়্যারহাউজে মজুদ রাখা যাবে ১ লাখ লোকের তিন মাসের খাবার।