অনলাইন ডেস্ক::
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধ শক্তি ও ১৫ আগস্টের খুনিদের দোসররা এখনো ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ছিল, তাদের থেকে মদদ পায় তারা। এজন্য সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।
মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে ছাত্রলীগ আয়োজিত শোক দিবসের আলোচনায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমানকে মুক্তিযুদ্ধে সেক্টর কমান্ডার করা হয়েছিল। কিন্তু সে কখনো পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গুলি চালিয়েছে, এরকম কোনো নজির নাই। কেউ দেখাতেও পারবে না। কর্নেল রশিদ ও ফারুক বিবিসিতে যে সাক্ষাৎকার দিয়েছে, সেখানেও তারা স্বীকার করেছে, জিয়াউর রহমান এ খুনিদের সঙ্গে ছিল।’
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ করা হাজার হাজার সেনাসদস্য হত্যার মূল নেপথ্যেও ছিলেন বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা।
দেশের মেধাবী ছাত্রদের অস্ত্র, মাদক ও অর্থ তুলে দিয়ে বিপথে নিয়ে গেছে জিয়াউর রহমান- এমন মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তার স্ত্রী খালেদা জিয়াও ক্ষমতায় এসে হুমকি দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগকে মোকবিলা করতে তার ছাত্রদলই যথেষ্ট। তিনিও ছাত্রদলের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছেন।’
সংগ্রামের ইতিহাসে ঘুরে দাঁড়ানোর বিভিন্ন তাৎপর্যময় ঘটনা তুলে ধরে ছাত্রলীগের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, ৭৫ এর পর এই দেশকে পাকিস্তানের প্রদেশ বানানোর চেষ্টা করেছে অবৈধ ক্ষমতা দখলকারীরা।
মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের বিতর্কিত ভূমিকা নিয়েও ছাত্রলীগের সামনে ইতিহাস তুলে ধরেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। স্বাধীনতা প্রত্যাশিত ছিল না বলে মুক্তিযোদ্ধা সেনা সদস্যদেরও হত্যা করেছিলেন জিয়া জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের পায়ে পায়ে শত্রু আছে, আমাদের চলার পথ মসৃণ নয়, সে কথা মাথায় রেখে এগিয়ে যেতে হবে। সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে এগুলে সফলতা আসবেই। তবে সত্যের পথ সব সময় কঠিন থাকে। এ কঠিনকে সঙ্গে করে যারা এগিয়ে যেতে পারে, তারাই সাফল্য আনতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’৭৫-এর পর বঙ্গবন্ধু নামটা মুছে ফেলা হয়েছে। বিকৃত ইতিহাস প্রচার করা হতো, জয় বাংলা স্লোগানও নিষিদ্ধ ছিল। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শ নিষিদ্ধ করা হয়। ভাবখানা এমন দেশ স্বাধীন হয়নি। আজকে আর বঙ্গবন্ধুর নাম মুছা যাবে না। স্বাধীনতার ইতিহাস মুছা যাবে না। বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী, আমার দেখা নয়া চীন ও গোয়েন্দা ডায়েরি ৭ খণ্ডে প্রকাশ করা হয়েছে সেখান থেকেই বাংলাদেশের ইতিহাস ও সত্য বেরিয়ে আসছে।
বঙ্গবন্ধুর বদৌলতেই জিয়াউর রহমান মেজর থেকে মেজর জেনারেল হয়েছিলেন, পাকিস্তান থাকলে সে কিন্তু মেজরই থেকে যেত এমন কথাও বলেন তিনি।
জাতির পিতার আদর্শ বজায় রেখে আগামী দিনের রাজনীতিতে ছাত্রলীগকে গড়ে তোলার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ প্রধান।
মায়ের স্মৃতিচারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার মা ছাত্রলীগ সংগঠনকে গড়ে তোলায় দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন। আর্থিক সংকট দেখা দিলে নিজের হাতের গয়না বিক্রি করে টাকা জোগাড় করেছিলেন।’
ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য দেন- আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আব্দুর রহমান।