নিজস্ব প্রতিবেদক ::
তরুণ সাংবাদিক ও নিউজ এডিটরস্ কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার রাকিবকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আমলে নিয়েছে বরিশাল আদালত। মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আনিচুর রহমান রোববার দুপুরে বাদীর অভিযোগ আমলে নিয়ে ঘটনাস্থল সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে এজাহারটি মামলা হিসেবে গ্রহণে নির্দেশ দিয়েছে। মামলার বাদী খন্দকার রাকিবের আর্জিতে হত্যার পরিকল্পনাকারী হিসেবে দৈনিক মতবাদ পত্রিকার ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএম জাকির হোসেনকে প্রধান করে তার ৫ অনুসারীকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া আসামির তালিকায় রয়েছে অজ্ঞাত আরও ১৫ জন।
উল্লেখ্য, ১ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় শহরের স্বরোডে মোহনা ক্লাব সম্মুখে খন্দকার রাকিবের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। পুর্ব-পরিকল্পিত এই ঘটনার আলামত এবং বাদীর জখম গুরুতর বিবেচনা করে বিচারক বাদী আর্জির মুল্যায়ন করে এই নির্দেশ দেন।
এর আগে খন্দকার রাকিবের পক্ষে তার এক সহদর বাদী হয়ে কাউনিয়া থানায় একটি এজাহার দিলে জাকিরের নির্দেশনায় তার এক অনুসারীর পরিবার আরেক একটি অভিযোগ দাখিল করলে পাল্টাপাল্টি আইনী আশ্রয়ের আবেদনে কাউনিয়া থানাসহ শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তারা বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়ে।
তবে অপর একটি সূত্র বলছে, জাকিরের পক্ষে মামলাটি সাজানো, তা পুলিশ হলেও খন্দকার রাকিবের মামলাটি যেন না হয় সেজন্য কোন এক মহল থেকে তাদের চাপের মুখে ফেলে দেওয়া হয়। এই হামলা এবং মামলা দায়েরের উদ্যোগ নিয়ে জল কম ঘোলা হয়নি। ফলশ্রুতিতে পুলিশ কৌশলগত কারণে মামলা গ্রহণে কালক্ষেপন করায় বাদী আদালতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন।
আজ রোববার দুপুরে খন্দকার রাকিব অন্তত ১০জন সাংবাদিক সহকর্মীদের নিয়ে আদালতে যান। ঠিক বেলা ১২টার দিকে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তার অভিযোগ উপস্থাপন করেন। সেখানে আর্জিতে তার ওপর হামলার যে বর্ণনা দেওয়া হয়েছে, বিচারক তা স্বচোখে দেখেন। এরপরেই বাদীর আর্জি আমলে নিয়ে মামলাটি গ্রহণে থানা পুলিশকে ব্যবস্থার নেওয়ার নির্দেশ দেন।
এসময় খন্দকার রাকিবকে আইনগত সহায়তা দিতে আইনজীবী জসিম উদ্দিন হাওলাদার উপস্থিত ছিলেন। বিচারকের এই নির্দেশের ফলে আপাতত ক্ষুব্ধ সংবাদকর্মীদের একটি অংশের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসতে দেখা গেছে।
একটি সূত্র নিশ্চিত করে, রাকিব যখন আদালতে, তখন মামলার মুল আসামি এসএম জাকির কলেজ রোডে নিজ বাসভবনে অবস্থান করছিলেন এবং খবরা-খবর রাখছিল। মামলা দায়ের হচ্ছে, এই খবর আগেভাগেই আঁচ করতে পেরে বিতর্কিত এই নেতার বেশ কয়েকজন অনুসারীকে আদালত আঙ্গিনায় দেখা গেছে। এদের মধ্যে অন্যতম এক আসামির প্রকাশ্য উপস্থিতি ছিল। যে কী না আসামির তালিকার দ্বিতীয়জন।
মামলার নথিসূত্রে পাওয়া তথ্যমতে, এসএম জাকিরকে প্রধান করে অপর চার আসামিরা হচ্ছে, সাহেবেরহাটের রিপন হাওলাদার, পলাশপুরের আল আমিন সাগর, রুপাতলী হাউজিংয়ের সৈয়দ মেহেদী হাসান ও ফকিরবাড়ি রোডে আরেফিন তুষারের নাম পর্যায়ক্রমে রয়েছে। এদের মধ্যে সৈয়দ মেহেদী হাসানের মুল বাড়ি পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার নলী ইউনিয়নে এবং আরেফিন তুষার বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জের কাজিহাট থানার আন্দারমানিক গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা। উভয়ে এসএম জাকিরে পত্রিকায় কর্মরত রয়েছে। অপর আসামিরা জাকিরের মালিকানাধীন একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মচারী।
প্রসঙ্গত উল্লেখ, খন্দকার রাকিব এসএম জাকিরসহ ৬জনকে আসামি করে ঢাকা সাইবার ট্রাইব্যুনালে গত ২৪ আগস্ট একটি মামলা দায়ের করে ফিরে আসার সাতদিনে মাথায় তার ওপার এই হামলা ঘটনা ঘটে। সঙ্গত কারণে ধারণা করা হচ্ছে, মামলা করার আক্রোস থেকেই এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। বিচারক মামলাটি আমলে নেওয়ার ক্ষেত্রে এই বিষয়টিও মূল্যায়ন করেন বলে আদালত সূত্র জানিয়েছে।
এখন দেখার পালা কাউনিয়া থানা পুলিশ এই হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নিতে কোন পথে অগ্রসর হয়। তারপরেই পরিস্কার হয়ে উঠবে পুলিশের স্বচ্ছতার বিষয়টি।’