অনলাইন ডেক্স: বলিউড তারকা শহীদ কাপুর নিজেই জানালেন, জীবনে কখনো মদ পান করেননি তিনি। কিন্তু যে দুটো ছবির জন্য তিনি সবচেয়ে বেশি পরিচিত, সেখানে তাঁকে দেখা গেছে তুমুল মাতাল তিনি। এ বিবেচনায় বলতেই হয়, তিনি ভালো অভিনেতা। ডেকান ক্রনিকলে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুসারে, সম্প্রতি ‘কবির সিং’ ছবির ৩৮ বছর বয়সী এই তারকা এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, যেকোনো জটিল চরিত্র তাঁকে টানে।
গত ২১ জুন মুক্তি পেয়েছে শহীদ কাপুরের সর্বশেষ ছবি ‘কবির সিং’। এখন পর্যন্ত এই ছবিটি আয় করেছে ৩৪০ কোটি রুপি। এটিই ভারতীয় চলচ্চিত্র ইতিহাসের একমাত্র ‘এ’ সার্টিফিকেট পাওয়া প্রথম ও একমাত্র ছবি, যেটি ২০০ কোটির মাইলফলক পার করেছে। এ সার্টিফিকেট পাওয়ার অর্থ, ছবিটি কেবল প্রাপ্তবয়স্করাই দেখতে পারবেন। ছবিটিতে শহীদ কাপুর, কিয়ারা আদভানির অভিনয় প্রশংসিত হলেও অনেক নেতিবাচক রিভিউ রয়েছে ছবিটি নিয়ে।প্রথম দিনে কবির সিংয়ের আয় ২০ কোটি রুপি। যেটি শহীদ কাপুরের ছবির প্রথম দিনের সর্বোচ্চ আয়। দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনের আয় যথাক্রমে ২৩ ও ২৮ কোটি রুপি। এভাবে সপ্তাহ শেষে দেখা গেল, ছবিটি এখন পর্যন্ত এই বছরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আয় করা ছবি। এর আগে কেবল ‘ভারত’ই প্রথম সপ্তাহে ‘কবির সিং’য়ের চেয়ে বেশি আয় করেছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে ‘কবির সিং’ ছাড়িয়ে যায় ‘ভারত’কেও। এটি এখন পর্যন্ত এই বছরের সর্বোচ্চ আয় করা ছবি। আর ইতিমধ্যে বলিউডের সর্বকালের সর্বোচ্চ আয় করা ছবির তালিকায় নবম স্থান অধিকার করে নিয়েছে।
আর এসব নেতিবাচক মন্তব্য মূলত নারীর উপস্থাপন নিয়ে। আরও স্পষ্টভাবে বললে হয়, কিয়ারা আদভানির প্রীতি চরিত্রের উপস্থাপন আর প্রীতির সঙ্গে কবির সিংয়ের আচরণ—এ সবকিছু ক্ষেপিয়েছে কিছু নারীবাদীদের। একজন তো বলেছেন, যখন বড় পর্দায় কবির সিং প্রীতির গায়ে হাত তোলে, আর হলে বসে দর্শক হাততালি দেয়, আর কিছুই এর চেয়ে ভয়ংকর হতে পারে না। সেসবের দাঁতভাঙা জবাবও দিয়েছেন পরিচালক সন্দ্বীপ ভাঙা। তবে সব বিতর্ক ছাপিয়ে মানুষ দলে দলে দেখেছে ‘কবির সিং’ আর প্রশংসায় ভাসিয়েছে।প্রশংসায় ভাসছেন দুই সন্তানের বাবা শহীদ কাপুর। তাই সাক্ষাৎকারের শুরুতেই শহীদ কাপুরের কাছে জানতে চাওয়া হলো, তাঁর এই ছবিগুলো তিনি সন্তানদের দেখাবেন কি না? শহীদ কাপুর উত্তর দিলেন, তিনি অবশ্যই দেখাবেন। তবে সে জন্য অবশ্যই কন্যা মেশা টাপুর (৩) আর পুত্র জৈন কাঠুরের (১) শিশুকাল পার করে অন্তত কৈশোরে পা দিতে হবে। শহীদ কাপুর মনে করেন, তাঁকে বোঝার জন্য তাঁর সন্তানদের অবশ্যই তাঁর ছবিগুলো দেখা উচিত।
শহীদ কাপুর যে চরিত্র একবার করেছেন, সেই একই ধরনের চরিত্রের দিকে তিনি আর ফিরেও তাকাননি। প্রতিবার বৈচিত্র্যময় আর চ্যালেঞ্জিং চরিত্র নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অভিনয় একটা পেশা। একজন অভিনেতা যে চরিত্রগুলো করেন, সেই চরিত্রগুলোই অভিনেতা হিসেবে তাঁর মানদণ্ড নির্ধারণ করে। অভিনয়শিল্পী হিসেবে আমরা যে চরিত্রগুলো করি, সেগুলো সমাজ থেকে উঠে আসা। আমি যদি আমার সন্তানদের সামনে মদ খেতাম, সিগারেট ফুঁকতাম, সেটা কি ভালো হতো? কিন্তু আমি এমন সব চরিত্র করি, যেগুলো মোটেই আমার মতো না। পর্দায় আমার সন্তানেরা যেভাবে আমাকে দেখবে, ওরা অবাক হয়ে যাবে। আর সেটিই অভিনয়শিল্পী হিসেবে আমাকে ভালো নম্বর দিতে সাহায্য করবে। একজন অভিনয়শিল্পীর জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ।’শহীদ কাপুরের স্ত্রী মীরা রাজপুতের বয়স মাত্র ২৪। ২০১৫ সালের ৭ জুলাই মাত্র ২০ বছর বয়সে তাঁর সঙ্গে শহীদ কাপুরের বিয়ে হয়। ২ সন্তানের বাবা হিসেবে শহীদ কাপুরের বয়স ঠিক আছে। কিন্তু স্ত্রী মীরা রাজপুত কম বয়সেই ২ সন্তানের মা হয়ে গেলেন কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে শহীদ কাপুর খুব মজার কথা বলেছেন। বলেছেন, তিনি নাকি বিয়ে করে, দ্রুত দুই সন্তানের বাবা হয়ে, সব পারিবারিক দায়িত্ব শেষ করে ক্যারিয়ারে মন দিতে চান!
তাঁর ‘পুরুষতান্ত্রিক’ চরিত্র নিয়েও মুখ খুলছেন এই অভিনেতা। বলেছেন, ‘অভিনয়শিল্পী হিসেবে আমি সব সময় সততার সঙ্গে কাজ করতে চেয়েছি। আমার করা চরিত্রটা একজন ভালো মানুষের হতে পারে, খারাপ মানুষেরও হতে পারে। আর প্রতিটি মানুষের ভেতর তো কমবেশি একটা “ডার্ক সাইড” থাকেই। কেউ শতভাগ ভালো না। তাই বলে কি পর্দায় সেই চরিত্রগুলো উঠে আসবে না? তবে আমরা যখন খারাপগুলো আঙুল দিয়ে দেখানো বন্ধ করে দেব, তখনই সমস্যাগুলো বেড়ে চলবে। একটা সমস্যাকে সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত না করলে তার সমাধান সম্ভব না।’